খাগড়াছড়িতে পানির জন্য হাহাকার

0

সিএইচটিনিউজ.কম
Pani
খাগড়াছড়ি: প্রাকৃতিক বৈরিতায় খাগড়াছড়ির ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়ায় জেলায় অধিকাংশ পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় খাবার পানির সংকট চরম আকার নিয়েছে। জেলার আট উপজেলার দুই-তৃতীয়াংশ নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ায় ও পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পাহাড়ি এলাকায় পানির জন্য হাহাকার পড়েছে। দীর্ঘ ৯ মাসেরও অধিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় পাহাড়ি এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে আহরিত পানির উৎসগুলো পানি শূন্য হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মাইলের পর মাইল দূরের পথে পানি আহরিত করেও দূষিত পানি পান করে নানা পানিবাহিত রোগের শিকার হচ্ছে।

প্রতিবছর জেলায় এ সময়ে পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হলেও জেলায় প্রাকৃতিকভাবে সৃজিত বনাঞ্চলগুলো বিরান হয়ে যাওয়ায় এ বছর পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়ায় সংকট চরম আকার নিচ্ছে বলে অভিমত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, জেলার আট উপজেলায় এমনিতেই বিশাল অংশ জুড়ে মাটির নিচে পাথরের বেষ্টনী থাকায় অগভীর নলকূপ স্থাপন করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় প্রান্তিক জনগণ প্রাকৃতিকভাবে পানির উৎস থেকেই খাবার পানির চাহিদা পূরণ করেন। এসব এলাকার পানির চাহিদা পূরণে সরকারিভাবে গভীর নলকূপ স্থাপনের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে মাটির নিচে পাথরের বেষ্টনী থাকায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এসব এলাকায় অগভীর নলকূপ স্থাপনের চেষ্টাও ব্যর্থ হচ্ছে।

এলাকার চাহিদা অনুযায়ী সরকারিভাবে জেলার প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় পানির উৎস সৃষ্টি না হওয়ায় নদী, খাল, ঝিরি কিংবা পাহাড়ের পাশে গর্ত থেকে পাওয়া পানি সারা বছরের অধিকাংশ সময় পানির চাহিদা পূরণ করলেও শুষ্ক মৌসুমে এসব উৎস শুকিয়ে পানির সংকট প্রকট আকার নিচ্ছে। খোদ খাগড়াছড়ি শহরের অধিকাংশ পানির উৎস অকেজো হয়ে পড়ায় পানির জন্য সাধারণ মানুষকে চরম সংকটে পড়তে হচ্ছে।

এদিকে মহালছড়ি উপজেলার সিন্ধুকছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুইনুপ্রু চৌধুরী জানান, সিন্ধুকছড়ি ইউনিয়নের বিশাল অংশ জুড়ে মাটিতে পাথারের বেষ্টনী থাকায় অগভীর নলকূপ স্থাপন করা যাচ্ছে না। তিনি জানান, তার ইউনিয়নের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকার জনগণ বাধ্য হয়ে নদী, খাল, ঝিরি ও গর্তের পানি পান করে নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিবছর এই ইউনিয়নে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এ বছরও তার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে।

পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মালেক জানান, এলাকায় ২০০৬ সালে বেশ কয়েকটি গ্রামে ডায়রিয়া মহামারী আকার নিয়ে মারা গেছে বহু লোক। দীঘিনালা মেরুং ইউনিয়নের নয়মাইল সাবেক মেম্বার তরুণ ত্রিপুরা জানান, এলাকার পানির সব উৎস শুকিয়ে গেছে। এলাকার লোকজন খাবার পানির জন্য মাইলের পর মাইল হেটেও নিরাপদ পানি পাচ্ছে না। অনেকেই ড্রামে করে খাগড়াছড়ি সদর থেকে গাড়িতে পানি নিয়ে আসছে।

সৌজন্যে: যুগান্তর

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More