অভিযোগ, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু : প্রশ্ন রমেল চাকমা

ঢাকায় মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির আলোচনা সভা

0

ঢাকা: পিসিপি নান্যাচর শাখার সাধারণ সম্পাদক রমেল চাকমার সেনা হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবাদে ২৭ মে শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব হলরুমে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির উদ্যোগে “অভিযোগ, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু : প্রশ্ন রমেল চাকমা” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন লেখক ও গবেষক রেহেনুমা আহমেদ।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির ব্যারিস্টার শাহদীন মালিক, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, প্রফেসর সিআর আবরারসহ বেশ ক’জন মানবাধিকার কর্মী, গবেষক ও সাংবাদিক।
IMG_20170527_111834
গবেষক রেহেনুমা আহমেদ তার লিখিত দীর্ঘ বক্তব্যে বলেন, ১৯ এপ্রিল রমেল চাকমা মৃত্যুর পর পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠন গুলোর প্রতিবাদ বিক্ষোভের ফলে ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে প্রকাশ পায়। গবেষক রেহনুমা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর উদ্ধৃত করেন এবং সরেজমিনে রাঙ্গামাটিতে ঘটনাস্থলে রমেলের মা-বাবা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বের সাথে কথা বলে প্রাপ্ত তথ্যও তুলে ধরেন।

সভায় রেহনুমা আহমেদ জানান, ২৬ মে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পরিচালকের সাথে সাক্ষাত করলে তিনি রমেলের শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন বিশেষকরে অণ্ডকোষে জখমের কথা উল্লেখ করেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় রমেল চাকমাকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং নির্যাতনের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। সৎকারের উদ্দেশ্যে লাশ বাড়ীতে নেয়ার সময় স্থানীয় সেনা সদস্যরা হাইজেক করে যেভাবে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি নীতি তোয়াক্কা না করে নিজেরা পেট্রোল দিয়ে পুড়ে ফেলে সবচেয়ে ঘৃণ্য কাজ করেছে।

প্রফেসর আবরার আহমেদ বলেন, এভাবে আইনশৃংখলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু চলতে দেয়া যায় না। দায়িত্ব নিয়ে আমাদেরকে কিছু একটা করতে হবে।

প্রবীন আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার শাহদীন মালিক বলেন, ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিনহার্ট থেকে শুরু হয়েছে সর্বশেষ রমেল চাকমা হত্যাকাণ্ড। আমাদের সংসদ যেভাবে সেনাবাহিনীকে মানুষ মারার লাইসেন্স দিয়েছে দুনিয়ার কোন সভ্যদেশে তা দেখা যায়না । এখন পুনঃমূল্যায়নের সময় হয়েছে।

ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, মানবাধিকার কমিশন ছাড়া আর কোন প্রতিষ্ঠান তদন্তের উদ্যোগ নেয়নি। হাইকোর্ট অনেক বিষয়ে স্বতপ্রণোদিত হয়ে উদ্যোগ নিলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না।

আলোচনা সভায় উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্য থেকে অনেকেই রমেল হত্যার বিষয়ে জানতে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং মূল বক্তা রেহেনুমা আহমেদ তার উত্তর দেন।

উল্লেখ্য যে , রমেল চাকমাকে নান্যাচর জোন কমান্ডার বাহালুল আলম ও মেজর তানভীরের নেতৃত্বে এক দল সেনাসদস্য ৫ এপ্রিল নান্যাচর বাজার থেকে তুলে জোনে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায় এবং ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
________
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More