দিঘীনালায় শহীদ ভরদ্বাজ মুনির ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
দিঘীনালা প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রামের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রথম শহীদ ৭০ বছরের বৃদ্ধ ভরদ্বাজ মুনির ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আজ ১৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দিঘীনালা উপজেলার বাবু পাড়া মাঠে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ দিঘীনালা থানা শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দিঘীনালা থানা শাখার সভাপতি আলো জীবন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুমেন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কণিকা দেওয়ান, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর দিঘীনালা থানা ইউনিটের অন্যতম সংগঠক দেবদন্তত্রিপুরা, চাঙমা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর পরিচালক আনন্দ মোহন চাকমা ও দিঘীনালা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শতরূপা চাকমা৷ সমাবেশ পরিচালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দিঘীনালা থানা শাখার নেতা জীবন চাকমা।
সমাবেশ শুরুর আগে একটি মিছিল ইউপিডিএফ-এর দিঘীনালা ইউনিটের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে উপজেলা সদর ও বাস স্টেশন প্রদক্ষিণ করে আবার বাবু পাড়া মাঠে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা শহীদ ভরদ্বাজ মুনির আত্মত্যাগের প্রতি গভীর সম্মান জানিয়ে বলেন, নিপীড়িত জনতার অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা যাবে না। এ ঋণ শোধ করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকারহারা জনগণের ঐক্যের কোন বিকল্প নেই৷ পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্র ও যুব সমাজকে আরো বেশি সোচ্চার হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামিল হতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের অধিকারের প্রতি আন্তরিক নয়৷ পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন জারি রেখে সরকার কার্যত অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে নস্যাত্ করে দিয়ে জাতিগত পরিচয় মুছে দেয়ার ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ওপর বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়েছে। একজন পাহাড়ি সরকারের এই চাপিয়ে দেয়া বাঙালি জাতীয়তা কিছুতেই মেনে নেবে না।
বক্তারা শহীদ ভরদ্বাজ মুনির হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারপূর্বক সেনাশাসনের অবসান, সেটলারদের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন,পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি, পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ১৩ অক্টোবর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক আহুত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যোগ দিতে এসে দিঘীনালা থানা বাজার এলাকায় ভরদ্বাজ মুনি সেনা ও সেটলারদের যৌথ হামলায় নিহত হন।