পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসের এদিন : ক্যজয় মারমার শহীদ বার্ষিকী
সিএইচটিনিউজ.কম
আজ ৩১ মার্চ ক্যজয় মারমার ১৯তম শহীদ বার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের এদিন খাগড়াছড়ির পানখিয়া পাড়া এলাকায় চাইথোয়াই প্রু মারমার মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধের প্রচারণা চালাতে গিয়ে এপি ব্যাটালিয়নের সদস্যদের গুলিতে নির্মমভাবে শহীদ হন ২০ বছরের টগবগে তরুণ ক্যজয় মারমা।
সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আরো অনেক সহযোদ্ধার সাথে ক্যজয় মারমারও গিয়েছিল সড়ক অবরোধ কর্মসূচির প্রচারণা করতে। তাদের প্রচার কার্যে মাঝপথে বাধা দেয় পানখিযা পাড়া স্কুলের নিকটস্থ এপি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। গণতান্ত্রক রীতিনীতিকে কোনরূপ তোয়াক্কা না করে সৈন্যরা তাদেরকে মারতে উদ্যত হয়। নাগরিক অধিকার, মৌলিক অধিকার ও সংবিধানের কথা যুক্তির সাথে তুলে ধরতে গেলে এপি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়। যুক্তিতর্কে কুলে উঠতে না পেরে এক পর্যায়ে তারা অস্ত্র দিয়ে জবাব দেয়। হাতের স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রের ব্রাশ ফায়ারে ক্যজয় মারমার বুক ঝাঁঝরা করে দেয়। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে শহীদের তালিকায় যুক্ত হয় আরো একটি সাহসী নাম ক্যজয় মারমা।
ঘাতকের বুলেট তার দেহ ভেদ করার পর সেদিন ক্যজাই মারমার শেষ উচ্চারণ ছিল “স্বায়ত্তশাসনের জন্য রক্তের প্রয়োজন। আমি দিয়ে গেলাম। জয় আমাদের অনিবার্য।” ক্যজয় মারমার এই সাহসী উচ্চারণ পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়েই রয়েছে। অকুতোভয় লড়াকু সৈনিকদের যুগিয়েছে সাহস, দিয়েছে সামনে এগিয়ে চলার মন্ত্রণা।
পরদিন ১ এপ্রিল ক্যজয় মারমার মরদেহ নিয়ে হাজার হাজার শোকার্ত প্রতিবাদী জনতা রাজপথে নেমে এই নির্মম হত্যাকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
যেখানে দমন-পীড়ন সেখানে আন্দোলন চলবেই। গুলি ও হত্যাকান্ড চালিয়ে অত্যাচারী শাসক আন্দোলন স্তব্দ করে দিতে পারেনি। শত নিপীড়ন-নির্যাতনের পরও পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলন চলছে। যে জনতা জেগেছে, তাকে আর ঘুম পাড়িয়ে রাখা যাবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত-নির্যাতিত জনতার আন্দোলনও একদিন জয় হবেই।
———————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।