পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানী আগ্রাসনের ৬৮ বছর উপলক্ষে ঢাকায় আলোচনা সভা
সিএইচটি নিউজ ডটজম
ঢাকা : বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানী আগ্রাসনের ৬৮ বছর উপলক্ষে আজ ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক আলাচনা সভা আয়োজন করেছে। ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে ৪.৩০টায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমার সভাপতিত্বে এবং পিসিপি দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমার পরিচালনায় আলোচনা করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরুপা চাকমা ও পিসিপির অর্থ সম্পাদক বিনয়ন চাকমা।
আলোচকরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এক সময় স্বতন্ত্র ও স্বাধীন রাজ্য ছিল। মুঘল আমলে নাম মাত্র কার্পাস কর দিয়ে এখানকার রাজা এ রাজ্য স্বাধীনভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। ব্রিটিশরা বাংলায় শাসন ক্ষমতা নেয়ার পর কয়েক বছর পর তাদের আগ্রাসীনীতির কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অধিক কর দাবি করলে তাদের সাথে সেই সময়ের চাকমা রাজার সাথে ব্রিটিশদের যুদ্ধ এবং সন্ধি হয়। ব্রিটিশরা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাতন্ত্র্যকে মেনে নেয়। ব্রিটিশদের কর প্রদান করলেও ১৮৬০ সাল পর্যন্ত পার্বত্যবাসীরা ব্রিটিশের প্রজা ছিলেন না। ১৮৬০ সালে তাদের রাজ্যগ্রাসী নীতির কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তারা অধিনস্ত করে জেলায় পরিণত করে। ব্রিটিশরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে তাদের শাসন কাঠামোর আওতায় আনলেও পাহাড়িদের বিশেষ রীতি ও বৈশিষ্ট সংরক্ষণ এবং অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ১৯০০ রেগুলেশন আইন তৈরি করে। এ আইনে ফলে সমতল থেকে বাঙালিরা অনুমতি ছাড়া প্রবেশ ও বসবাস করতে পারত না।
আলোচকবৃন্দ আরো বলেন, জিন্নার সাম্প্রদায়িক দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ ভাগ হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তি আইন অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু শিখদের খুশি করার জন্য পাঞ্জাবের যে অংশটা পাকিস্তানের পড়ার কথা ছিল সেটি ভারতের অন্তর্ভূক্ত করে দেয়া হয়েছিল,অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কখনো এই অন্তর্ভূক্তি মেনে নিতে পারেনি। একারণে ১৫ আগস্ট রাঙামাটিতে ভারতীয় পতাকা এবং বান্দরবানে বার্মা পতাকা উত্তোলন করা হয়। ২০ আগস্ট বেলুচ রেজিমেন্ট সশস্ত্র আগ্রাসন চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম দখল করেছিল।
সভায় আলোচকরা দমন-পীড়ন, অধিকার হরণ ও আন্দোলন নস্যাতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতন ও সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।
—————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।