পিসিপি-যুব ফোরাম নেতাসহ ৬ জনকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ
ঢাকা : রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় নব্য মুখোশবাহিনী ও এমএনলারমাপন্থী সংস্কারবাদী জেএসএস সন্ত্রাসী-দুর্বৃত্তদের দিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভরে পিসিপি-যুব ফোরামের নেতাসহ ৬ জনকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ)।
শনিবার (১৮ আগস্ট) বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ-এর সভাপতি বিনয়ন চাকমার সভাপতিত্বে ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সহসাধারণ সম্পাদক বরুন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় সদস্য নতুন কুমার চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরুপা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, ইনাইটেড ওয়াকার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের যুগ্ম সম্পাদক প্রমোদ জ্যোতি চাকমা।
এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সহসভাপতি বিপ্লব ভট্টাচার্য।এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী গার্মেন্টস টেক্সটাইল শ্রমিক ফোরামের আহবায়ক শহীদুল ইসলাম সবুজ।
সমাবেশে থেকে বক্তারা আজ সকাল ৮ টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরে স্বনির্ভর বাজার ও ইউপিডিএফ অফিসের আশে-পাশে অবস্থানরত পিসিপি-যুব ফোরামের নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণের ওপর রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট নব্য মুখোশবাহিনী ও এমএন লারমাপন্থী সংস্কারবাদী জেএএস’র সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক অতর্কিতে বেপরোয়া ব্রাশ ফায়ার করে ৬ জনকে হত্যা ও ৪ জনকে গুরুতর জখম করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনা সংঘটিত হয় পুলিশ বক্স ও বিজিবি খাগড়াছড়ি সেক্টরের কয়েক গজ দূরত্বে। তা সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় বাহিনী সন্ত্রাসীদের কোন বাধা দেয়নি। উপরন্তু সন্ত্রাসীরা বিজিবির গেটের সামনে অস্ত্র উচিয়ে পেরাছড়ার দিকে নির্ভয়ে অগ্রসর হয়। এদিকে এ ঘটনার ঘন্টা দুয়েক পর মিছিল নিয়ে পেরাছড়া-ভাইবোন ছড়া এলাকার প্রায় কয়েক হাজার জনতা সদরের দিকে আসতে চাইলে পেরাছড়া এলাকায় তাদের ওপরও ফের সশস্ত্র হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতেও নারীসহ ৪ জন আহত হয়, যার মধ্যে সন কুমার চাকমা নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায়। তারা বলেন, স্বনির্ভরে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যদি রাষ্ট্রীয় বাহিনী পদক্ষেপ নিত তাহলে পেরাছড়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটতো না।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ এবং প্রশাসনকে দায়ি করে বক্তারা বলেন, সেনা-প্রশানের প্রত্যক্ষ সহায়তায় এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে, যা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নিস্ক্রিয়তার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্য দিবালোকে এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, তাই এ ঘটনার জন্য সরকার ও প্রশাসন সম্পূর্ণ দায়ি। এ ঘটনার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায় এড়াতে পারে না বলে নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেন।
বক্তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, সরকার যদি এমএন লারমাপন্থী জেএসএস ও নব্য মুখোশ বাহিনীকে দিয়ে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেয়া না হয়, তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এর থেকে উদ্ভুত যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য সরকার ও প্রশাসনকে দায় নিতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা হত্যাকারী দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক সাজার জোর দাবি জানান।
সমাবেশ শেষ হওয়ার পর প্রেসক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়।
——————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।