পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এই দিন
বান্দরবানে পিসিপি’র সম্মেলন ও পাহাড়ি গ্রামে হামলার ২১ বছর
আজ ১৫ মার্চ বান্দরবানে পিসিপি’র সম্মেলন ও দু’টি পাহাড়ি গ্রামে হামলার ২১ বছর পূর্ণ হল। ১৯৯৫ সালের এই দিন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর বান্দরবান জেলা শাখার সম্মেলন বানচালের উদ্দেশ্যে পুলিশ ও বহিরাগত বাঙালিরা মিছিলের উপর হামলা চালায়। এতে পিসিপি’র ৭ নেতাকর্মীসহ বহু আহত হয়। এদিন দু’টি পাহাড়ি গ্রামে হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়।
পিসিপি’র সম্মেলনকে বানচাল করতে ১৩ মার্চ কুখ্যাত দালাল সাচিং প্রু জেরীর বাসভবনে মিটিং করে কতিপয় দাগি মাস্তান ও বিএনপি’র নেতাকর্মী “বান্দরবানের শান্তিপ্রিয় জনগণ” নামে একটি ভূঁইফোড় সংগঠনের জন্ম দেয়। ১৫ মার্চ ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও এরা মিছিল করে পাহাড়ি বিদ্বেষী ও উস্কানিমূলক শ্লোগান দেয়। ফলে ১৪৪ ধারা অমান্য করে পিসিপিও মিছিল বের করতে বাধ্য হয় । পিসিপি’র সম্মেলন কারোর বিরুদ্ধে নয় বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়। এতৎসত্ত্বেও দৃর্বৃত্তরা পুলিশের সহায়তায় মিছিলের উপর হামলা চালায়। এ হামলায় রিক্তন চাকমাসহ পিসিপি’র ৭ জন নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়। হামলাকারী দুর্বৃত্তরা এদিন শহরের মারমা অধ্যুষিত গ্রাম উজানী পাড়া ও মধ্যম পাড়ায় হামলা চালায়। তারা লুটপাট ও বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশ উল্টো পিসিপি’র ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ও ২২ জনকে গ্রেফতার করে।
দেশের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ এর প্রতিবাদ জানায়। সারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ১৭ মার্চ ঢাকা থেকে মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা জেলা প্রশাসক, জেল কর্তৃপক্ষ, ধর্মীয় পুরোহিত, পুলিশ অফিসার, ঘটনার শিকার ব্যক্তিসহ অন্যান্য আরো বহু লোকের সাথে কথা বলেন। তদন্ত টিমটি ১৮ মার্চ ঢাকায় ফিরে এসে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তারা ১৫ মার্চের ঘটনার জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও ছাত্র শিবিরকে দায়ি করেন।
বান্দরবানে এ হামলার দিনটিকে ‘অশুভ শক্তি প্রতিরোধ দিবস’ বা ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।
———————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।