রাঙামাটিতে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের উপর সেটলার হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ পিসিপির
রাঙামাটি : রাঙামাটি জেলা প্রশাসন কার্যালয় সম্মূখে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সংগঠনটির রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘‘শিক্ষায় সাম্প্রদায়িকরণের বিরুদ্ধে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে” শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচী চলাকালে আকস্মিকভাবে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ নামধারী কয়েকজন সেটলার এসে কিছু বুঝে উঠার আগেই সমাবেশ থেকে ব্যানার, পোষ্টার ও মাইক কেড়ে নিয়ে নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। সেটলারদের অতর্কিতে হামলায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি অভিজিৎ বড়ুয়া সহ কয়েক জন নেতাকর্মী আহত হন।
উক্ত হামলার ঘটনায় বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখার পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি কুনেন্টু চাকমা আজ ২৬ এপ্রিল বুধবার সংবাদ মাধ্যমে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে কুনেন্টু চাকমা উদ্ধেগ প্রকাশ করে বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন সেটলাররা সেনাসৃষ্ট গুটি কয়েক সংগঠনে নাম ব্যবহার করে সেনাপ্রশাসনের ছত্রছায়ায় অবস্থান করে পার্বত্য চট্টগ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার হীন পায়তারা চালাচ্ছে।রাষ্ট্রীয় কিছু অশুভ শক্তির সাথে গোপন বোঝাপড়া থাকায় জনসমক্ষে অপরাধ করেও সেটলারদের কোন প্রকার শাস্তি না হওয়ায় তারা প্রতিনিয়ত হিংসাত্মক ও জঘন্যতম ঘটনা সংঘটিত করার জন্য সদা তৎপর থাকে এবং যখনি সুযোগ পায় তাদের এই হিংসাত্মক কার্যক্রম প্রদর্শন করতে তারা কখনো পিছপা হয়না। তারই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে আজ বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের যৌক্তিক দাবি সম্বলিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে সেটলার কর্তৃৃক হামলা করা হয় এবং হামলা অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ জাহাঙ্গীর ও হাবিব নামে দুই সেটলারকে লোক দেখানো গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানায় নিয়ে যায়। পরে সেখানেও কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ রশিদ মূচলেকা নেয়ার আরো একটি রম্য নাটক মঞ্চস্থ করে সরকারি অথিতিশালায় নিয়ে জামাই আপ্যায়ন করার পর দুই সেটলারকে ছেড়ে দেয়।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বর্তমানে এতটাই প্রতিক্রিয়াশীল হয়েছে যে, পাহাড়ি কোন সংগঠনের কার্যক্রম তো দূরের কথা, তাদের বাঙালিদের মধ্যকার নিপীড়িত জনগণের পক্ষে কথা বলা সংগঠনের কার্যক্রমও তাদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছে।মূলত একারনেই বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচীতে তারা হামলা চালিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ছাত্রনেতা বিবৃতির মাধ্যমে আরো বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচীতে হামলার মাধ্যমে এটা আরো সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হয়েছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সেটলারদের উগ্রবাদ বর্তমানে কোন পর্যায়ে চলে গেছে। এই ঘৃণ্য উগ্র মৌলবাদী থাবার হিংসার আগুনে পুড়ে অনেক পাহাড়ি এখনো ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিজ দেশে পরবাসী হয়ে আছেন এবং অনেকেই পঙ্গত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। নান্যাচর কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমাকেও অমানুষিকভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে এই উগ্র মৌলবাদী থাবার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক নান্যাচর জোন কমান্ডার মোঃ বাহলুল আলম ও মেজর তানভীর সহ সেনাবাহিনীর একদল সদস্য।
শেষে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমযোপযোগি দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয় সম্মূখে মানববন্ধন ও সমাবেশ চলাকালে অতর্কিতে হামলাকারী সেটলারদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক যথোপোযুক্ত শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানান।
——————————————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।