রাঙামাটিতে পিসিপি’র ২৮ বছর আন্দোলনের উপর আলোকচিত্র ও ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী
রাঙামাটি : “পিসিপি প্রতিষ্ঠার চেতনা সমুন্নত রেখে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন বেগবান করুন” এই শ্লোগানে ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ যাবতকাল আন্দোলনের উপর আলোকচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা ।
শনিবার (২৭ মে) বিকাল ৩ টায় রাঙামাটির কুদুকছড়িতে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে এ আলোকচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক কংসাই মারমা এবং সঞ্চালনা করেন অর্থ সম্পাদক জয়ন্ত চাকমা। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া আলোকচিত্র ও ভিডিও গুলোর গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে সভায় বক্তব্য প্রদান করেন, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বিপুল চাকমা, সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম এর কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ধর্মশিং চাকমা।
সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৮৯ সালে পিসিপি প্রতিষ্ঠার পর হতে শাসক শ্রেণীর বহু বাধা-বিপত্তি, ঝড়-ঝঞ্ছা ও দমন-পীড়ন দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করে আজ ২৮টি বছর বছর অতিক্রম করেছে। এ দীর্ঘ সময় পাড়ি দিতে পিসিপিকে সরকারের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়েছে। এই দীর্ঘ সংগ্রাম পরিচালনা করতে গিয়ে পিসিপি নেতাকর্মীদের স্বীকার করতে হয়েছে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, সহ্য করতে হয়েছে অসহনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন, সম্মূখীন হতে হয়েছে বহু হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সাথে। এরপরও নেতাকর্মীরা শাসক শ্রেণীর কোন চোখ রাঙানিতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়নি, বরং আরো দ্বিগুন উৎসাহ ও উদ্দীপনায় প্রতিবাদমুখর হয়ে প্রকম্পিত করে তুলেছিল সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজপথ। এই সংগ্রামী চেতনা ও বিপ্লবী মতাদর্শের কারনেই আজ পিসিপির একমাত্র প্রতিবাদী ও আপোষহীন ছাত্র সংগঠন হিসেবে সারা পার্বত্য চট্টগ্রামে ছাত্রদের উপর নেতৃত্ব প্রদান করে ছাত্রদের সংগঠিত করতে কোন বেগ পেতে হচ্ছে না।
বক্তারা সকল ছাত্র সমাজকে পিসিপি’র বিপ্লবী মতামর্শ ও চেতনায় উজ্জ্বীবিত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসক শ্রেণীর আগ্রাসী থাবা থেকে শোষণমুক্ত করার সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
পিসিপির এই উদ্যোগকে সমর্থন ও স্বাগত জানিয়ে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম এর অর্থ সম্পাদক ধর্মশিং চাকমা বলেন, এই আলোকচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনীর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলেই পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের শোষণের বিরুদ্ধে পিসিপি’র ভূমিকা সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত অন্যায় ধরপাকড়, নির্যাতন, নারী ধর্ষণ ও পর্যটনের নামে ভূমি বেদখলসহ সরকারের সকল শোষনের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ এবং সর্বস্তরের জনগণকে সোচ্চার ও সংগঠিত হতে এ প্রদর্শনী কিছুটা হলেও প্রভাবিত করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা শেষে আলোকচিত্র ও ভিডিও চিত্রগুলো উন্মূক্ত করে দেয়া হয়। প্রদর্শনীতে ১৯৮৯ সালের ২১মে লংগু গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় পিসিপি’র প্রথম মৌন মিছিল থেকে শুরু করে সম্প্রতি নান্যাচরে সেনা নির্যাতনে শহীদ ছাত্র নেতা রমেল চাকমা হত্যার প্রতিবাদসহ পিসিপি’র এযাবতকাল আন্দোলনের আলোকচিত্র ও ভিডিও চিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ পেপার কাটিংগুলো স্থান পায়। প্রদর্শনীটি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উন্মূক্ত রাখা হয়।
————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।