আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস

0

সিএইচটিনিউজ.কম ডেস্ক:
Women dayআজ ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। প্রতি বছর বিভিন্ন প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে এই নারী দিবস। এই নারী দিবসের ইতিহাস হলো দেড়শ বছর আগে অধিকার আদায়ে সোচ্চার হাজার হাজার নারী শ্রমিকের সংগ্রামের ইতিহাস।

উনিশ শতকে বারো ঘণ্টার অধিক পরিশ্রম করে নারী শ্রমিকরা তাদের পুরুষ সহকর্মীর তুলনায় অনেক কম মজুরি পেতেন, কখনও বা অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে জুটত সামান্য খাবার। এরই প্রতিবাদে গড়ে উঠে আন্দোলন।

১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে নিম্নতম মজুরি আর মানবেতর কর্মপরিবেশের বেড়াজাল থেকে নারীর উত্পাদনশীল কর্মক্ষমতাকে মুক্ত করতে এবং মজুরি বৈষম্যমুক্ত, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশের দাবিতে সেলাই

১৮৬০ সালে নারী শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন বলবৎ রাখতে নিজস্ব ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে চান। তবে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে ১৮৮৯ সালে সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ও জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতি ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যার মূল প্রতিপাদ্য ছিল নারী শ্রমিকের অধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং নারী পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা।

১৯০৮ সালের ৮ মার্চ সমাজতান্ত্রিক নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে নিউইয়র্কের শহরের পূর্বপ্রান্তে হাজার হাজার নারী তাদের অধিকার রক্ষা, শিশু শ্রম বন্ধ এবং ভোটাধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ সভায় যোগ দেন।

১৯১০ সালের আগস্টে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক দলের সম্মেলনে সতেরোটি দেশের একশ জন প্রতিনিধি উপস্থিত হন। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক দলের নেত্রী ক্লারা জেটকিন ১৯১১ সাল থেকে ৮ মার্চকে ‘আর্ন্তজাতিক নারী সমঅধিকার দিবস’ পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

১৯১৪ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে বিশেষ একটি দিন নারী সমঅধিকার দিবস পালন করা হতো।

১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ নারীর এই ঐতিহাসিক সংগ্রামের স্বীকৃতি প্রদানে ১৯৭৫ সালকে নারীবর্ষ ঘোষণা করে এবং প্রতিবছর ৮ মার্চকে ‘নারী দিবস’ হিসেবে উদযাপনের বিল উত্থাপন করে। ১৯৭৭ সালে সে বিল অনুমোদিত হলে ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিজস্ব ইতিহাস এবং প্রথানুযায়ী ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে উদযাপনের ঘোষণা দেয়।

সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও নারী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামেও হিল উইমেন্স ফেডারেশন সহ বিভিন্ন সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করছে।

প্রতিবছর নারী দিবস পালিত হলেও নারীরা চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নারী নির্যাতনের মাত্রা চরমমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গড়ে প্রতিদিন দেশে ৫০টির মতো নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। মহিলা পরিষদ বলছে, গত এক বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

শুধু নারী দিবস পালন করেই নারীদের নিরাপত্তা, অধিকার রক্ষা হয় না। নারীদের সম্মান মর্যাদা প্রদান ও তাদের নিরাপত্তা, অধিকার সুনিশ্চত করার জন্য রাষ্ট্রকেই সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আর এজন্য নারীদেরও অবিরাম লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More