ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমার ১ম মৃত্যু বার্ষিকীতে ঢাকায় স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

0

ঢাকা : ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমা হত্যার ১ বছরপূর্তিতে ঢাকায় বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ)-এর উদ্যোগে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল কার্যালয়ে আজ ৩ জানুয়ারি বিকাল ২:৩০ টায় সভার অনুষ্ঠান শুরু হয়।

#স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা

স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা। বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর অন্যতম সংগঠক মাইকেল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সভাপতি বরুণ চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এম এম পারভেজ লেলিন ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)’র কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপুল চাকমা।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুনয়ন চাকমা।

#স্মরণসভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করছে পিসিপি ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপন চাকমা

সভার শুরুতে মিঠুন চাকমার স্মরণে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পিসিপি ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপন চাকমা। তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক উত্থানকে ঠেকানোর জন্য মিঠুন চাকমাকে খুন করা হয়েছে।

নেতৃত্বকে হত্যা করে সংগ্রামকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক বলপ্রয়োগ ছাড়া জনগণের মুক্তি আসবে না।

#স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন মুক্তি কাউন্সিল সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম

এইদিন আমাদের শোকের দিন নয়, এই দিন প্রতিরোধের, সংগ্রামের ও প্রতিশোধ নেয়ার। সংগ্রাম ছাড়া শাসকশ্রেণিকে মোকাবিলা করার কোন বিকল্প শক্তি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান স্মৃতিচারণ করে বলেন, মিঠুন আমার ছাত্র জীবনের বন্ধু ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন একসাথে অনেক আন্দোলনের স্মৃতি রয়েছে। যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে তিনি উপস্থিত থাকতেন।

#স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান

নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে মিঠুনকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি পার্বত্য অঞ্চলে স্টেট কিলিং শুরু হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, জালিম সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমেই কেবল আমরা মিঠুন চাকমার মৃত্যুর দায় কিছুটা শোধ করতে পারবো।

ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা বলেন, শাসকগোষ্ঠী তথাকথিত ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের নাম দিয়ে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের কাছে এখন তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, এসব রাজনৈতিক হত্যাকান্ডে নব্য রাজাকার সংস্কারবাদী জেএসএস ও সেনাসৃষ্ট মোত্তালেব বাহিনী (নব্য মুখোশ)’কে সরকার ব্যবহার করছে।

#স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন ইউপিডিএফ সংগঠক মাইকেল চাকমা

তিনি আরো বলেন, সরকার-সেনাবাহিনী এতদিন ধরে পাহাড়ে যে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছে এর প্রতিবাদে দেশব্যাপী তেমন কোন প্রতিবাদ হয়নি। ক্ষেত্র বিশেষে অনেক সময় বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে চালানো রাষ্ট্রীয় অপপ্রচার বা গুজবকে সত্য হিসেবে অনেকে বিশ্বাস করেছে। কিন্তু আজ সে অত্যাচার-নিপীড়ন কেবল পাহাড়ে সীমাবদ্ধ নেই। গোটা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামসহ গোটা দেশকে ফ্যাসিবাদী কবল থেকে মুক্ত করতে পাহাড় ও সমতলের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম পরিচালনা করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন।

ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি এমএম পারভেজ লেলিন বলেন, মিঠুন চাকমা একজন কেবল রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না। তিনি একজন উঠতি বুদ্ধিজীবীও ছিলেন। তাঁর জীবনে অনেক বুদ্ধিবৃদ্ধিক কাজ করে গেছেন। মিঠুন চাকমা জাতিসত্তা এবং শ্রেণি সংগ্রামকে যেভাবে বিশ্লেষণ করতে পারতেন সেভাবে পারার মতো লোক দেশের খুব কমই রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় পিসিপি, এইচডব্লিউএফ, ডিওয়াইএফ, ছাত্র ফেডারেশন-এর কর্মী ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More