এইচডব্লিউএফের দুই নেত্রীকে উদ্ধারের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে মানববন্ধন
রাঙ্গামাটি : সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষিত সন্ত্রাস বন্ধ, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, খুনী, পলাতক আসামি তপনজ্যোতি চাকমা (বর্মা) ও তার সহযোগিদের গ্রেফতার এবং সেনা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী কর্র্তৃক অপহৃত এইচডব্লিউএফ এর দুই নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে দ্রুত অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের দাবিতে রাঙ্গামাটির সাপছড়ি, বোধিপুর, কুদুকছড়ি ও ঘিলাছড়িতে একযোগে তিন নারী সংগঠন (হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি) এর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ২৩ মার্চ (শুক্রবার) সকাল ১০ টায় থেকে ১১টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে নানা শ্রেণী-পেশার নারী ও পুরুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং সেনা-মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহৃত নেত্রীদ্বয়কে দ্রুত অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের জোর দাবি জানান।
কুদুকছড়ি বাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি কুনেন্টু চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সহ-সভাপতি রুপসী চাকমা।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেনা-সৃষ্ট নব্যমুখোশ সন্ত্রাসী বাহিনী গঠনের পর হতেই তাদের কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিবেদিত অগ্রগামী সৈনিকদের নিরাপত্তা বাহিনীর তালিকানুযায়ী বেছে বেছে খুন করা হচ্ছে। সর্বশেষ গত রবিবার রাঙ্গামাটি সদরের কুদুকছড়ি আবাসিক এলাকায় সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ইচডব্লিউএফের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও জেলা সাধারণ সম্পাদক দয়াসোনা চাকমা অপহরণ, ছাত্র মেসে অগ্নিসংযোগ এবং যুব নেতা ধর্মশিং চাকমাকে গুলি করে আহত করে।
বক্তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হতে চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপহৃত দুই নেত্রীকে উদ্ধারের কোন উল্লেখ্যযোগ্য তৎপরতা নেই। এতে দুই নেত্রীর জীবন নিয়ে অনেকটা শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা। এবং দুই নেত্রী অপহরণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তার নামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী তথা সরকারই দায়ী রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা অপহৃত এইচডব্লিউএফের দুই নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে অবিলম্বে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারে সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা পৃষ্ঠপোষিত সন্ত্রাস বন্ধ, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, দাগী খুনী, পলাতক আসামি এবং অপহরণ ঘটনার সাথে জড়িত চিহ্নিত অপরাধী তপনজ্যোতি চাকমা(বর্মা) ও তার সহযোগিদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তি প্রদানেরও জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য গত রবিবার (১৮ মার্চ) সকাল সাড়ে নয়টায় সেনা সৃষ্ট অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা রাঙামাটি কুদুকছড়ির আবাসিক এলাকায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে এইচডব্লিউএফ’র দুই নেত্রীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়, ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হতে চললেও এখনো তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ সময় সন্ত্রাসীরা একটি ছাত্র মেস পুড়িয়ে দেয় ও যুব ফোরাম নেতা ধর্মশিং চাকমাকে গুলি করে জখম করে।
————————
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।