কল্পনা অপহরণ মামলার শুনানী আবারো পেছালো, পরবর্তী তারিখ ১৮ জুলাই
রাঙামাটি : কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার শুনানী আবারো পেছানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৮ জুলাই ২০১৭, মঙ্গলবার । আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) কল্পনা চাকমার অপহরণ মামলার বাদী কালিন্দী কুমার চাকমার নারাজী আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আজকের শুনানীতে কল্পনা চাকমা অপহরণ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নামে কল্পনা অপহরণের পর প্রকাশিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি ও তৎকালীন দৈনিক সংবাদ ও দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার ২২, ২৩ ও ২৪ জুন, ১৯৯৬ সংখ্যায় কল্পনা অপহরণ বিষয়ে প্রকাশিত পত্রিকার কপি তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক আদালতে দাখিল করার কথা ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা এসপি সাঈদ তারিকুল হাসান উক্ত শুনানীতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তার পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের জিআরও উক্ত দলিল দাখিল করার জন্য আরো বর্ধিত সময়ে আবেদন জানান। পরে জিআরও’র আবেদনের কারণে বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. হোসেন শুনানীর পরবর্তী তারিখ আগামী ১৮ জুলাই নির্ধারণ করেন।
এদিকে আজকের শুনানীতে কল্পনা অপহরণ মামলার বাদি কল্পনা চাকমার বড়ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা উপস্থিত হননি। তিনি সিএইচটিনিউজ ডটকম কে জানান, আজ সকালে তিনি কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলায় তার পক্ষে উকিল এডভোকেট জুয়েল দেওয়ানের সাথে কথা বলে আদালতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, আজ ২১ বছর হলো তিনি আদালতে বারবার আসছেন। একইসাথে তিনি অগনিত বার তার বোন কল্পনা অপহরণ মামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার, বিচার ও যথাযথ শাস্তি চেয়ে বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, বার বার শুনানী পেছানোয় তিনি কিছুটা হয়রান হয়েছেন। দূর প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রাঙামটি শহরে আসা যাওয়ায় তাকে শত হাজার টাকা গুণতে হচ্ছে। তবে তাতেও তিনি হাল ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, প্রয়োজন হলে তিনি মৃত্যু পর্যন্ত তার বোন কল্পনা চাকমা অপহরণের বিচার চাইবেন। তবে বারে বারে শুনানী পেছানোর মাধ্যমে কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ইংরেজিতে কথা আছে, জাস্টিজ ডিলেইড, ইজ জাস্টিজ ডিনাইড। বিচার করতে দেরী করা মানে সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করা।
আজকের শুনানী বিষয়ে বর্তমানে রাঙামাটিতে অবস্থানকারী হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরুপা চাকমার কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা খুবই পরিষ্কার যে শুনানী পেছানোর মাধ্যমে আসলে কল্পনা চাকমা অপহরণকারীদের রক্ষারই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে তিনি একইসাথে বলেন, তাদের সংগঠন ধারাবাহিকভাবে তাদের প্রতিবাদ সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। আগামী ১২ জুন কল্পনা চাকমা অপহরণ দিবসকে উপলক্ষ করে তাদের সংগঠন নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিরাট নারী সমাবেশ আয়োজন করবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমাকে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন দিবাপূর্ব রাতে তার নিজ বাড়ি নিউ লাল্যাঘোনা থেকে সেনাবাহিনীর কমান্ডার লে. ফেরদৌসের নেতৃত্বে অপহরণ করা হয়। অপহরণের সময় স্থানীয় সেটলার ভিডিপি সালেহ আহমেদ, নূরুল হকও ছিলো বলে কল্পনা অপহরণ মামলার বাদি কালিন্দী কুমার চাকমা অভিযোগ করেছেন।
দীর্ঘ ২১ বছরেও কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত কোনো আসামীকে সরকার গ্রেপ্তার করেনি।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।