কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি ৫ নারী সংগঠনের

0

kalponachakma_photoরাঙামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫ নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, নারী আত্মরক্ষা কমিটি, সাজেক নারী সমাজ ও ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি আজ ২১ মার্চ ২০১৭ মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে শুনানীর নামে কালক্ষেপন না করে কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস ও তার সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

বিবৃতিতে ৫ নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, কল্পনা চাকমাকে অপহরণের ২০ বছর পরেও চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস ও তার গংদের গ্রেফতার  না করে সরকার অপরাধীদের বাচাঁনোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ যাবত অনেক তদন্ত টিম গঠন করা হলেও পরিকল্পিতভাবে তদন্ত প্রতিবেদনে চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। উপরন্তু শুনানীর নামে কালক্ষেপন করে কল্পনা চাকমা পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কল্পনা চাকমাকে অপহরণের মাধ্যমে লে. ফেরদৌস তথা সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীদের নিরাপত্তার যে হুমকি তৈরি করে রেখেছিল, সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে কলেজ ছাত্রী ইতি চাকমাকে হত্যার মধ্য দিয়ে নারীর জীবন-নিরাপত্তা-সম্ভ্রমের ওপর হুমকি আরো গুরুতর হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৯৬ সালের ১২জুন তৎকালীন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমাকে নিজ বাড়ি নিউ লাল্যাঘোনা থেকে ভোর রাতে কজইছড়ি সেনা ক্যাম্প কমান্ডার লে. ফেরদৌস গং কর্তৃক অপহরণের লোমহর্ষক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাথে ইতি চাকমা হত্যার কিছুটা সামঞ্জস্য রয়েছে। ঘটনার শিকার উভয়েই কলেজ ছাত্রী এবং ঘটনাস্থল জনমানবহীন-বাইরে অন্য কোথাও নয়, লোকালয়ে নিজ আবাসস্থলে তারা আক্রমণের শিকার হয়েছে।

বিবৃতিতে ৫ নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শুনানীর নামে কালক্ষেপন না করে অবিলম্বে কল্পনা চাকমা অপহরণের প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস ও তার সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।bibriti

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, নারী আত্মরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক এন্টি চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরুপা চাকমা ও ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি কাজলী ত্রিপুরা।

উল্লেখ্য, কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার ৩৯তম তদন্ত কর্মকর্তা রাঙামাটি পুলিশ সুপার তারিকুল হাসান গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন- “‘আমার তদন্তকালে ভিকটিমের অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ায় তাহাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় নাই। এই লক্ষে বিশ্বস্ত গুপ্তচর নিয়োগ ছাড়াও বাদীর পক্ষে এবং এলাকার লোকজনদের সহায়তা কামনা এবং বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করিয়াও ভিক্টিম কল্পনা চাকমাকে উদ্ধার এবং মামলার রহস্য উদঘাটন হয় নাই। বিধায় মামলা তদন্ত দীর্ঘায়িত না করিয়া বাঘাইছড়ি থানার চূড়ান্ত রিপোর্ট সত্য নং ০৩, তারিখ ৭/৯/২০১৬, ধারা ৩৬৪ দ: বি: বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করিলাম। ভবিষ্যতে কল্পনা চাকমা সম্পর্কে কোনও তথ্য পাওয়া গেলে বা তাহাকে উদ্ধার করা সম্ভব হইলে যথানিয়মে মামলাটির তদন্ত পুনরুজ্জীবিত করা হইবে।’

পুলিশ সুপারের এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে মামলার বাদী কল্পনা চাকমার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা আদালতে নারাজী আবেদন করলে গত ১০ জানুয়ারি রাঙামাটি জেলা আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী মোহসিন-এর বিচারিক আদালতে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এতে আদালত আগামী ২২ মার্চ এ মামলার পূনরায় শুনানীর তারিখ ধার্য্য করেন।
————–

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More