খাগড়াছড়িতে রেন্টিনা চাকমাকে অপহরণের অভিযোগে মামলা
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়িতে রেন্টিনা চাকমাকে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে তার পিতা বিমল কান্তি চাকমা। গত ১০ জুন খাগড়াছড়ি সদর থানায় তিনি এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে রেন্টিনা চাকমা (নেভি), বয়স ২৯ বছর, মিলনপুরস্থ আইডিএফ কার্যালয়ে মাষ্টার ট্রেইনার কাম নিউট্রিশনিষ্ট পদে চাকুরীরত ছিল। গত ২৩/০৫/২০১৪ ইং তারিখে পানছড়ি নিবাসী সৈকত চাকমা, পিতা-মৃত সন্তোষ মনি চাকমা, সাং-টিএন্ডটি টিলা, থানা-পানছড়ি, খাগড়াছড়ির সহিত আমার মেয়ে রেন্টিনা চাকমার সামাজিক ও পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। এরপর গত ৪/০৬/২০১৪ ইং তারিখে সকাল আনুমানিক ৮ ঘটিকার সময় যথারীতি মিলনপুরস্থ আইডিএফ অফিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। অফিস টাইম শেষ হয়ে যাবার পরও রেন্টিনা চাকমা বাড়ি ফিরে না আসিলে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করিলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায় এবং আমি সম্ভাব্য সব জায়গায় ও আত্মীয় স্বজনের নিকট খোঁজ নিই। এরপরেও তার কোন খোঁজ না পাওয়ায় বিগত ০৬/০৬/২০১৪ ইং তারিখে খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি জিডি করি। যাহার খাগড়াছড়ি সদর থানার সাধারণ ডায়েরী নং-২১২, তাং ০৬/০৬/২০১৪ ইং।’
খাগড়াছড়ি সদর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে তিনি আরো বলেন, ‘সৈকত ভদ্র, পিতা- চিত্ত রঞ্জন ভদ্র, সাং-খানপুর, উপজেলা-বাঘের পাড়া, জেলা-যশোর নামে একক ব্যক্তি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে খাগড়াছড়ি আসিয়া দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়ে রেন্টিনা চাকমাকে রাস্তাঘাটে ও মোবাইলে উত্যক্ত করত এবং বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিত। তার কু-প্রস্তাবে রাজী না হলে আমার মেয়েকে জোরপূর্বক অপহরণ করে তুলে নিয়ে যাবার হুমকি প্রদান করত। আমার মেয়ে নিঁখোজ হওয়ার পর আমার মেয়ে রেন্টিনা চাকমার স্বামী সৈকত চাকমার মোবাইল ফোনে উক্ত সৈকত ভদ্র ফোন করিয়া জানায় যে, রেন্টিনা চাকমা তাহার হেফাজতে ঢাকায় রহিয়াছে। যাহার মোবাইল নম্বর-০১৫৫১৩২৬৫০০। এরপর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার ঢাকা অফিসে গিয়ে উক্ত সৈকত ভদ্র এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করিয়া হই এবং অদ্যবধি আমার মেয়ে রেন্টিনা চাকমার কোন হদিস পাই নাই। এমতাবস্থায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমার মেয়ে রেন্টিনা চাকমাকে উদ্ধারপূর্বক অপহরণকারী সৈকত ভদ্রকে আইন মোতাবেক গ্রেপ্তার করিয়া দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার আবেদন করিতেছি।’
বিমল কান্তি চাকমা তাঁর মেয়েকে উদ্ধারে থানা কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা দিচ্ছে না অভিযোগ করে সিএইচটিনিউজ.কমকে বলেন, খাগড়াছড়ি সদর থানা কর্তৃপক্ষ মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করলেও তার মেয়ে রেন্টিনা চাকমাকে উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ বিষয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলেও পুলিশ সহযোগিতা প্রদানে নানা গড়িমসি করছে। এমনকি মামলার নথিপত্রও এখনো আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি। তিনি তাঁর মেয়েকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানান।
এদিকে, রেন্টিনা চাকমাকে উদ্ধার ও সৈকত ভদ্রকে প্রথম আলো থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে গত ৮ জুন ঢাকায় অধ্যয়নরত পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে। এ সময় প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ সৈকত ভদ্র এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রেন্টিনা চাকমাকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানা যায়নি।
————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।