খাগড়াছড়িতে সবিতা চাকমাকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামীদের নাম বাদ দেয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক,সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কমলছড়িতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী সবিতা চাকমা নামে এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামীদের নাম বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে এলাকার জনমনে চরম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারী দেব রতন চাকমা তার স্ত্রী সবিতা চাকমাকে হত্যার ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় আসামীদের নাম উল্লেখ না করে ‘অজ্ঞাত কে বা কারা’ লেখা হয়।
এলাকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মামলা দায়ের করার জন্য সন্দেহভাজন বাঙালি শ্রমিকদের নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে সেদিন সন্ধ্যায় নিহতের স্বামী দেব রতন চাকমা, বালু মহলের মালিক বীর কুমার চাকমার ছেলে বঙ্গমিত্র চাকমা, কমলছড়ি ইউনিয়নের সদস্য বিনয় বাহু চাকমা, গ্রামের বাসিন্দা বীর বাহু চাকমাসহ কয়েকজন গ্রামবাসী খাগড়াছড়ি থানায় যান। কিন্তু সেদিন বিদ্যুৎ না থাকায় কম্পিউটারে এজাহারটি কম্পোজ করা সম্ভব হয়নি। পরে তারা সন্দেহভাজন বাঙালি শ্রমিকদের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পুলিশের হাতে দিয়ে পরদিন (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে থানায় এসে মামলাটি দায়ের করা হবে বলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সাথে কথা বলে থানা থেকে বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু রাতের মধ্যে থানা কর্তৃপক্ষ মামলার এজাহারটি লিখে রাখে এবং সকালে দেব রতন চাকমা থানায় গেলে তার থেকে দস্তখত নিয়ে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে।
উক্তে এজাহারে উল্লেখ করা হয়, “… ১৫/২/২০১৪ খ্রি: সকাল হইতে একটি ট্রাক্টর উক্ত এলাকা দিয়ে জমির মালিক বীর কুমার চাকমা’র তত্ত্বাবধানে বালি বহন করিতেছিল এবং ঘটনাস্থলের পার্শ্বেই বেলা অনুমান ১২.০০ঘটিকার দিকে উক্ত ট্রাক্টরটি নষ্ট হইলে উক্ত ট্রাক্টরের চালক মোঃ নিজাম(৩০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং গঞ্জ পাড়া, থানা সদর- জেলা-খাগড়াছড়ি ট্রাক্টরটি মেরামত শেষে বিকাল অনুমান ০৪.০০ঘটিকার সময় ট্রাক্টরটি চলিয়া যায়। উক্ত ট্রাক্টর চালক, বালু মহলের মালিক তথা তত্ত্বাবধানকারী বীর কুমার চাকমা এবং ট্রাক্টরে থাকা শ্রমিকগণ উক্ত মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকিলেও থাকিতে পারে বলিয়া আমার সন্দেহ হয়।” এভাবে দেব রতন চাকমার সরলতা ও অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে সুকৌশলে বালু মহলের মালিক বীর কুমার চাকমাকে জড়িত করে পুলিশ দুর্বল ও বিকৃতভাবে মামলার এজাহারটি তৈরি করে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় মেম্বার বিনয়বাহু চাকমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকৃত আসামীদের আড়াল করার জন্য দেবরতন চাকমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পুলিশ চক্রান্তমুলকভাবে মামলার এজাহারে বীর কুমার চাকমাকে জড়িত করেছে। এটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা অচিরেই সন্দেহভাজন প্রকৃত আসামীদের নাম উল্লেখ করে আরো একটি মামলা করবো। যদি থানায় মামলাটি গ্রহণ করা না হয় তাহলে আমরা আদালতের আশ্রয় নেবো। তিনি তালবাহানা না করে সন্দেহভাজন আসামীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করারও দাবি করেন।