খাগড়াছড়ির সাধারণ জুম্ম ঠিকাদারদের সাথে প্রসিত খীসার মতবিনিময়

0

সিএইচটিনিউজ.কম

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির সাধারণ জুম্ম ঠিকাদারদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়েছেন আসন্ন সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি আসনে ইউপিডিএফ মনোনীত প্রার্থী প্রসিত বিকাশ খীসা। জুম্ম ঠিকাদার সমিতি মিলনায়তনে আজ ২৯ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় ঠিকাদারদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ঠিকাদার সমিতির আহ্বায়ক দীপায়ন চাকমা, সদস্য অংশা মারমা, কনক বরণ ত্রিপুরা, রিগ্যান চাকমা, মিসেস তন্দ্রা চাকমা, কমল বিকাশ ত্রিপুরা, তাপস ত্রিপুরা, কুহেলী দেওয়ান, প্রেমবন্ধু চাকমা, ধীমান খীসা, কিরন মারমা ও রবিশংকর তালুকদার প্রমুখ। এছাড়া সভায় নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক প্রদীপন খীসাও বক্তব্য রাখেন।

P1030591সভায় সাধারণ ঠিকাদারদের একজন বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত সংখ্যালঘু জাতিসত্তার জনগণের পক্ষে এম এন লারমা ব্যতীত কেউ কথা বলেনি। যেই-ই জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে সংসদে গিয়েছে তারা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করেছে। এবার খাগড়াছড়ি আসনে আমরা একজন যোগ্য প্রার্থী পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের অবশ্যই যোগ্য প্রার্থী প্রসিত বিকাশ খীসাকে হাতি মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে।

কমল বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, হাতি মার্কার প্রচারণা সভায় উপস্থিত থাকতে পেরে আমি ধন্য মনে করছি। এবারে আমাদের অবশ্যই প্রসিত বিকাশ খীসাকে জয়যুক্ত করতে হবে।

কুহেলী দেওয়ান নামে একজন নারী ঠিকাদার বলেন, আমরা বিএনপি এবং আওয়ামীলীগকে আগে ভোট দিয়েছি। কিন্তু তাতে আমাদের বিশেষ কিছুই লাভ বা অধিকার অর্জিত হয়নি। তিনি সভা থেকে প্রসিত বিকাশ খীসাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য
আহ্বান জানান।

প্রেমবন্ধু চাকমা বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে তিনি অবশ্যই অবশ্যই হাতি মার্কায় ভোট দেবেন।
ধীমান খীসা বলেন আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জনগণকে ‘জাতি হিসেবে ‘বাঙালি’ বানিয়েছে।

আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাসমূহের সাংসদরা সেসময় টেবিল চাপড়ে এই সংশোধনকে সমর্থন জানিয়েছে। বর্তমান ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি আসন থেকে প্রসিত বিকাশ খীসাকে যদি নির্বাচিত করা হয় তবে তিনি নিশ্চয়ই নিপীড়িত জাতিসত্তা ও জনগণের পক্ষে কথা বলবেন বলে আশাব্যক্ত করেন। তিনি প্রসিত বিকাশ খীসার নির্বাচনী প্রতীক হাতি মার্কায় ভোট দিতে সবাইকে আহ্বান জানান।

এ সময় আলোচকগণ পরষ্পর প্রতিদ্বন্দ্বী দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতা কামনা করেন।

সভায় প্রসিত বিকাশ খীসা ঠিকাদারদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষিত জনেরা সবাই চাকুরী করে না। তারা এখন পেশা হিসেবে ঠিকাদারীকে বেছে নিয়েছে। কাজ করতে যাতে কেউ অন্যায্যভাবে বঞ্চিত না হয়, নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না হয়, বঞ্চনার শিকার না হয় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পাহাড়ে বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ধরণের সমস্যা রয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণকে বঞ্চিত করে মানিকছড়ির সেমুতাঙ গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে পাচার করে নেয়া হচ্ছে। পার্বত্যবাসী গ্যাস বিদ্যুৎসহ সকল সম্পদের ন্যায্য ও সমান অংশিদার পাওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু সরকার এই ন্যায্য প্রাপ্যতা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করে রেখেছে।

ঠিকাদারী কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে উদ্দশ্যমূলকভাবে পাহাড়ি বাঙালি বিভাজন করা হয় উল্লেখ করে প্রসিত খীসা বলেন, শাসকগোষ্ঠী বিশেষ দুরভীসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য নিয়ে সকল ক্ষেত্রে পাহাড়ি বাঙালি বিভাজন জিইয়ে রেখেছে। ঠিকাদারীসহ বিভিন্ন ব্যবসাক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া মানে এই নয় যে, শাসকেরা বাঙালি দরদী। যদি তাই হতো তাহলে সমতলের কোটি কোটি অসহায় ছিন্নমূল বাঙালি জনগোষ্ঠির প্রতিও দরদ থাকতো। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি বাঙালি ভেদাভেদ ও বিভাজন নীতি জারি রাখা সরকারের একটি সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত।

তিনি এই ষড়যন্ত্রমূলক বিভাজন নীতির বিরুদ্ধে দল-মত জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্য উপস্থিত ঠিকাদারদের প্রতি আহ্বান জানান এবং সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More