গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কাউখালী থানা শাখার ৩য় কাউন্সিল সম্পন্ন
কাউখালী (রাঙামাটি) : “লেজুড়বৃত্তি, সুবিধাবাদী ও দাসত্বের মনোবৃত্তি পরিহার করুন, শাসকশ্রেণী ও তার দালালদের বিরুদ্ধে যুব সমাজ সোচ্চার হোন” এই শ্রোগানে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কাউখালী থানা শাখার ৩য় কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭) সকাল ৯টায় কাউখালী উপজেলার ঘাগড়াতে কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক অংচিং মারমার সভাপতিত্বে ও পাইশিহ্লা মারমার সঞ্চালনায় দলীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
কাউন্সিল অধিবেশনে প্রথমে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য বিনয় চাকমা। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ’র কাউখালী উপজেলা সংগঠক পুলক জ্যোতি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যচিং মারমা, রাঙামাটি জেলা শাখার আহ্বায়ক ধর্মশিং চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা সদস্য রুপসী চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালী থানা শাখার সহ সভাপতি নয়ন জ্যোতি চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণে দীর্ঘকাল ধরে অধিকার বঞ্চিত। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র কায়েম হলেও এই দেশে বসবাসরত জাতিসত্তাসমূহের সাংবিধানিক স্বীকৃতি মেলেনি। এদেশের ফ্যাসিবাদী সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সংখ্যালঘু জাতির জনগণের উপর উগ্রবাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়েছে। অগণতান্ত্রিক ও দমনমূলক ১১নির্দেশনা জারি রেখে জনগণের উপর অন্যায় দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। গত এক মাসের মধ্যে একাধিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এতে নারীরাও রেহাই পায়নি। তারা বলেন, গণতান্ত্রিক কর্মসূচিসহ জনগণের মত প্রকাশের অধিকার দিন দিন সংকুচিত করা হচ্ছে। এসব অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে যুব সমাজকে সংগঠিক করে যুব ফোরামকে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে পালিয়ে আসা ‘রোহিঙ্গা’ ইস্যু নিয়ে উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো দেশের ভিতরে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত সংখ্যালঘু জাতির লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকী দিচ্ছে। যার ফলে ভয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামে বিভিন্ন বসবাসরত পাহাড়ি চাকুরীজীবীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে, অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা।
পরে অংচিং মারমাকে সভাপতি,পাইশিহ্লা মারমাকে সাধারণ সম্পাদক ও বিনয় চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৭সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়। হাউজে নতুন কমিটি ঘোষণা ও গঠিত কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যচিং মারমা।
————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।