গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গা থানা শাখার কাউন্সিল সম্পন্ন
চট্টগ্রাম : “নিপীড়িত জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন সংগ্রামে যুব সমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ শুক্রবার (২৬ শে মে ২০১৭) চট্টগ্রাম মহানগরের আওতাধীন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের বন্দর থানা শাখার ৫ম কাউন্সিল, ইপিজেড থানা শাখার ১ম কাউন্সিল ও পতেঙ্গা থানা শাখার ২য় কাউন্সিল যৌথ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
নগরীর কদম মোবারক ইসলামাবাদী হলে দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত সম্মেলনের ১ম অধিবেশন শুরুতে নিপীড়িত জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। কাউান্সল প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক সুধাংশু চাকমার সভাপতিত্বে যুব নেতা সুকৃতি চাকমার সঞ্চালনায় ১ম অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যচিং মার্মা, নগর শাখার সহ-সভাপতি শুভ চাক্, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা, নগর শাখার সভাপতি পলাশ চাকমা, চবি শাখার দপ্তর সম্পাদক অর্পন চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব সূর্য্য চাকমা।
সম্মেলনে বক্তারা সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে ভাষ্কর্য সরানো ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার উদ্দেশ্যে উগ্র সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সাথে হাত মিলিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে সরকার গভীর রাতে ভাষ্কর্যটি সরিয়ে নিয়েছে। এঘটনার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুন্ঠিত হয়েছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, সরকার অগণতান্ত্রিক ১১ দফা দমনমূলক নির্দেশনা জারি করে পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসনভার একটি বিশেষ প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর নিকট হস্তান্তর করেছে। সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে সেনা-সেটলার ও বিভিন্ন কোম্পানি পাহাড়িদের জায়গা জোর করে কেড়ে নিচ্ছে। সেনা-সেটলার কর্তৃক ধর্ষণ ও খুনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইউপিডিএফ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হচ্ছে। মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন করে নিরস্ত্র ও নিরপরাধ মানুষকে মেরে ফেলা হচ্ছে। সম্প্রতি নানিয়াচরে এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমার হত্যাকাণ্ড তার দৃষ্টান্ত উদাহরণ।
বক্তারা নিপীড়িত জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শাসক শ্রেণীর সৃষ্ট দূর্যোগ মোকাবেলা করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন সংগ্রামে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
এরপর বেলা ২.৩০টায় শুরু হওয়া ২য় অধিবেশনে তিন শাখা নতুন কমিটির প্রস্তাবনা তুলে ধরেন যুব ফোরামের নগর শাখার সহ-সভাপতি শুভ চাক্। কাউন্সিলে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে ক্লান্তময় চাকমাকে সভাপতি, কালিশংকর চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট বন্দর থানা কমিটি, মিঠন চাকমাকে সভাপতি, নিরাময় চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট ইপিজেড থানা কমিটি ও সুধাংশু চাকমাকে সভাপতি, সূর্য্য চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট পতেঙ্গা থানার নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন তিনটি কমিটিকে শপথনামা পাঠ করান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যচিং মার্মা।
কাউন্সিল শেষে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি প্রেসক্লাব ঘুরে চেরাগী মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
——————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।