ঘাগড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজনের বাড়িতে সেনা তল্লাশী
কাউখালি (রাঙামাটি) প্রতিনিধি॥ সেনাবাহিনীর একটি দল আসন্ন ইউপি নির্বাচনে ঘাগড়া ইউনিয়নে আনারস মার্কা নিয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জগদীশ চাকমার বাড়িতে তল্লাশী চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টার দিকে ৩০ – ৪০ জনের একটি সেনা দল জুনুমা ছড়া গ্রামে তার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় জগদীশ চাকমা কাউখালি বাজারে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি দ্রুত তার বাড়িতে ফিরে যান এবং তার অবর্তমানে সেনাদের তার বাড়িতে প্রবেশ ও তল্লাশীর কারণ ও ব্যাখ্যা দাবি করেন।
কিন্তু সেনারা তাদের কাজের যুক্তিসঙ্গত কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। তবে তারা জগদীশ চাকমাকে ‘বহিরাগত না রাখার’ পরামর্শ দিয়ে চলে যান।
জগদীশ চাকমার ছেলে হিমেল চাকমা সিএইচটি নিউজ ডটকমকে বলেন, সেনারা ৩টি বড় মাইক্রোবাস ও ১টি আর্মি পিকআপ নিয়ে সেখানে যায় এবং তল্লাশী চালায়। ‘আমার ধারণা তারা স্থানীয় চাম্পাতলি ক্যাম্প ও রাঙামাটি জোন থেকে এসেছে।’
তল্লাশীর সময় হিমেল চাকমা ও তার দু’জন বন্ধু বাড়িতে ছিলেন। তার মা ইন্দিরা রাণী চাকমাও এ সময় পাশের গ্রামে নির্বাচনী প্রচারণার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
হিমেল চাকমা আরো বলেন, তিনি আর্মিদের হাতে একটি এলজি, চারটি কার্তুজের গুলি ও বেশ কিছু মার্বেল দেখতে পান। এই সব অস্ত্র ও গুলি দিয়ে তার বাবা জগদীশ চাকমাকে ফাঁসানো সেনাদের উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় যদি তারা সুযোগ পেতো তাহলে এগুলো আমাদের বাড়ির কোনায় বা আশেপাশে কোথাও রেখে দিয়ে পরে সেখান থেকে পাওয়া গেছে বলে দাবি করে আমাকে ও আমার বাবাকে ফাঁসাতো। কিন্তু আমাদের সতর্কতার কারণে তা করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’
সেনারা জগদীশ চাকমা ছাড়া আরও অন্ততঃপক্ষে ৬টি বাড়িতে তল্লাশী চালিয়েছে। এই বাড়িগুলোর একটি হলো তার নিজের, যেটি তিনি অন্যের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। তল্লাশী করা অন্য বাড়িগুলোর মালিকরা হলেন হরিধর চাকমা, শুভমনি চাকমা, জোহেলি বাপ, দীবর চাকমা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য চুজু বাপ।
হরিধর চাকমার বাড়িতে কেউ ছিলেন না। সেনারা তালা ভেঙে তার বাড়িতে প্রবেশ করে ও ব্যাপক তল্লাশী চালায়। তবে বেআইনী কোন কিছু উদ্ধারে তারা ব্যর্থ হয়।
শুভমনি চাকমা মনে করেন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে নির্বাচনে প্রভাব ফেলার জন্য এই তল্লাশী চালানো হয়েছে। প্রচারণায় পালের হাওয়া জগদীশ বাবু বা আনারসের পক্ষে রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে জগদীশ বাবু অবশ্যই জিতে যাবেন, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত’।
উল্লেখ্য, জগদীশ চাকমা ইউপিডিএফ ও জেএসএস (সন্তু) এর স্থানীয় কমিটির সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হন। এলাকায় তার ব্যাপক জন সমর্থন রয়েছে। কিন্তু পরে জেএসএস তার অঙ্গীকার থেকে সরে আসে এবং অন্য একজনকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায়। এতে এলাকার জনগণের মনে ওই প্রার্থী ও জেএসএস সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।