পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে
ছাত্রনেতা রমেল চাকমার মরদেহ পুড়িয়ে ফেলেছে সেনাবাহিনী, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
রাঙামাটি প্রতিনিধি।। পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে সামাজিক, ধর্মীয় রীতি-নীতি-প্রথা ছাড়াই ছাত্র নেতা এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমার মরদেহ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে ফেলেছে সেনাবাহিনী। এর প্রতিবাদে তাৎক্ষনিকভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ করে রাঙামাটি – খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ পালন করেছে রমেল হত্যা প্রতিবাদ কমিটি ও এলাকার বিক্ষুব্ধ জনগণ।
উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল রমেল চাকমাকে নান্যাচর উপজেলা পরিষদ এলাকা থেকে পিসিপি’র নান্যাচর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নান্যাচর কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমাকে নান্যাচর জোনের মেজর তানভীর-এর নেতৃত্বে সেনা সদ্যরা আটক করে জোনে নিয়ে গিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এতে রমেল চাকমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সেনারা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে সেনা নজরদারি ও পুলিশ প্রহরায় দুই সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বুধবার (১৯ এপ্রিল) রমেল চাকমা মারা যায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রমেল চাকমার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়। মরদেহটি বুড়িঘাট বাজারে পৌঁছানোর পর পরিবারের লোকজন বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রলারে (ইঞ্জিন চালিত নৌকা) উঠালে একদল সেনা সদস্য মরদেহটি ছিনিয়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায়। তারা রমেল চাকমার মরদেহটি সারারাত বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ বাবুল (বাবু)-এর বাসার পাশে রাখে। আজ শুক্রবার সকালে সেখান থেকে মরদেহটি সরিয়ে বুড়িঘাট বাজারের জাকির সওদাগরের পরিত্যক্ত একটি কক্ষে রাখা হয়। পরে দুপুরে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে সাথে নিয়ে সেনারা মরদেহটি ট্রলার যোগে পূর্ব হাতিমরায় নিয়ে গিয়ে কোন প্রকার সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি-নীতি-প্রথা ছাড়াই পেট্রোল ঢেলে পুড়ে ফেলে। তবে মরদেহের কিছু অংশ এখনো অক্ষত রয়েছে বলে এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে রমেল হত্যা প্রতিবাদ কমিটির নেতা-কর্মী ও এলাকার বিক্ষুব্ধ জনগণ তাৎক্ষণিকভাবে কুদুকছড়ি বাজার এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করে রাঙামাটি – খাগড়াছড়ি সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। অবরোধের ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এসময় কুদুকছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ানো হয় সেনা টহল। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে সেনা সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।