‘জাতীয় শোক দিবসে’ বাঘাইছড়িতে কথিত সেনা-সন্ত্রাসী সংঘর্ষ এবং কিছু জিজ্ঞাসা

0

।। সত্যদর্শী ।।
নিরাপত্তা বাহিনীর নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে সময়ে সময়ে প্রতিপক্ষীয় দলের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি সংঘর্ষ, হতাহত আর অপহরণের ঘটনা ঘটে থাকলেও গত ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে’ রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সংঘটিত সেনা-‘সন্ত্রাসী’ সংঘর্ষ বেশ মনোযোগের দাবি রাখে। সরকারি দল ও এর অঙ্গ সংগঠনসমূহের শোক দিবস পালনের নানাবিধ অনুষ্ঠানের প্রাবল্যে এদিন সাধারণত দেশের অন্যান্য অনেক ঘটনা আড়াল হলেও রাঙ্গামাটির ঘটনাটি মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে স্থান পেয়েছে। কিন্তু তার ফলো-আপ সংবাদ আর কোথাও প্রকাশিত হয় নি, এটা বাংলাদেশের প্রিন্ট-ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রধান দুর্বলতা। যার কারণে দেশে এবং বাইরে গুটি কয়েক ছাড়া বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের গ্রহণযোগ্যতা কম, এটা দুঃখজনক হলেও সত্য।

Commentaryসেনা সূত্র উদ্ধৃত করে ঘটনার পরে পরেই নিউজ পোর্টাল আর টিভি চ্যানেলসমূহে এক তরফাভাবে তা ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ পরিবেশনের ধরন দেখে অভিজ্ঞ যে কারোর এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি রাজনৈতিক দলকে ঘটনায় ফাঁসিয়ে তাদের জব্দ করা এবং সেনা সাফল্যের বিবরণ পেশই ছিল যেন তার মুখ্য উদ্দেশ্য! সেনা কর্তৃপক্ষের সন্তুষ্টি উৎপাদন করে বস্তুগত লাভের কোন ব্যাপার তার পেছনে ক্রিয়াশীল কিনা সেটাও মানুষের মনে উদয় হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

ঘটনাটি কোন গহীন অরণ্যে নয় একেবারে লোকালয়ে, বাঘাইছড়ির রূপকারি ইউনিয়নের বারিবিন্দু ঘাটের বড়াদামে। তাও কোন ক্ষেত বা বাগান বাগিচায় নয়, একেবারে গৃহস্থের বাড়িতেই। যার দেড় দুই কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বিজিবি’র ব্যাটেলিয়ন সদর, আর তার কিছু দূরে রয়েছে বিজিবি’র ট্রেনিং সেন্টার। মোবাইল ফোনের সুবাদে আজকাল যে কারোর সাথে যোগাযোগ করে সত্যতা নিরূপণ করা কোন অসাধ্যের ব্যাপার নয়। ঘটনাস্থল বড়াদামের উক্ত গৃহকর্তাকে পাওয়া সম্ভব না হলেও গ্রামের অন্য যে কারোর কাছ থেকে তা যাচাই করে নেয়া কঠিন ছিল না। পেশাদারী দায়িত্ব সাংবাদিকতার রীতি অনুসারে সত্যতা যাচাইয়ের সে কষ্টটুকু না করে একশ্রেণীর সংবাদ মাধ্যম তাৎক্ষণিকভাবে সেনা সূত্র উল্লেখ করে সংঘর্ষের ঘটনায় ইউপিডিএফ’কে জড়িয়ে কম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নি। অবশ্য পরে ইউপিডিএফ প্রচার বিভাগ এবং রাঙ্গামাটি ইউনিট ঘটনার সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে বিবৃতি দিলে তা সংশোধন করে। সত্যিকারভাবে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার নীতি অনুসৃত হলে কোন সংগঠন বিবৃতি দিক আর নাই দিক, সংবাদকর্মীর কাজই হচ্ছে আসল সত্য উন্মোচন করা।

ঘটনায় লক্ষ্য করার বিষয় হলো, কথিত সংঘর্ষে ‘সন্ত্রাসীদলের’ ৫ জন মারা পড়লেও নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে আহত হয়েছে কেবল ১ জন। ৭/৮টি অস্ত্র গোলা বারুদ উদ্ধারসহ ধৃত হয়েছে ৩ জন, যারা নিরীহ গ্রামবাসী এবং তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। সেনা সূত্র থেকে এ তথ্যও বেরিয়ে আসছে যে, আহত সেনা সদস্য (হাবিলদার, এখন কর্পোরেল) গুলিতে নয়, ধারালো কোন বস্তুর আঘাতে জখম হয়েছে। সেনা সূত্র মতে ‘সন্ত্রাসীরা’ ছিল ১৫/২০ জনের মধ্যে। আর তাদের ধরতে অভিযানে অংশ নিয়েছিল বাঘাইহাট সেনা জোনের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আলী হায়দার সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি সেনা ইউনিট, যার ইউনিট নাম্বার আর জনবলের সংখ্যা প্রকাশ করা হয় নি।

এখানে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে যদি প্রকৃতই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ অর্থাৎ গোলাগুলি হতো, তাহলে হতাহত হবার সম্ভাবনা থাকে উভয় পক্ষের। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে তা মনে হয় না, হতাহতের ঘটনা ঘটেছে একপক্ষীয়। কথিত ‘সন্ত্রাসীরা’ তো গহীন দুর্গম অরণ্যে অবস্থান নেয় নি, রাত যাপনের উদ্দেশ্যে গ্রামে গৃহস্থের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল। তাদের ধরতে গিয়ে কথিত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ৫ জন নিহত হলেও অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ৭টি, কোথাও কোথাও ৮টিও বলা হয়েছে। তাদের সংখ্যা ১৫/২০ বলা হলেও তা নিশ্চিত নয়। কারণ ঘটনাস্থল থেকে যে ৩ জনকে সেনাবাহিনী আটক করেছে, তারা উক্ত দলের সদস্য নয়, নিরীহ গ্রামবাসী। যদি সেনা সূত্রের দাবিমত কথিত ‘সন্ত্রাসীদের’ সংখ্যা ১৫/২০ জন হয়ে থাকে, তাহলে বাকীরা গেল কোথায়? সেনা সূত্র এটাও দাবি করেছে, রাতের অন্ধকারে নিরাপত্তা বাহিনী ‘সন্ত্রাসীদের’ ঘিরে ফেলতে সক্ষম হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, সেনা কর্তৃক অবরুদ্ধ দশা থেকে বাকী ‘সন্ত্রাসীরা’ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তার অর্থ দাঁড়ায়, ‘দেশপ্রেমিক বীর জওয়ানরা’ তাদের ঘিরে ফেলতে পারলেও সবাইকে ধরতে সক্ষম হয় নি। আরও পরিষ্কার করে বললে ‘দেশপ্রেমিক বীর সেনা জওয়ানরা’ তাদের ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। যদি কথিত ‘সন্ত্রাসীদের’ ধরে মিডিয়ার মুখোমুখি করানো হতো তাহলে কুশীলবদের পরিচয় জানা যেত, যা সেনাবাহিনী করতে সক্ষম হয় নি। উল্টো উক্ত গোষ্ঠীটির পরিচয় নিয়ে সেনা কর্তৃপক্ষ রহস্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।

বাঘাইছড়িতে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহতদের পোস্ট মর্টেম শেষে সনাক্ত করছেন স্বজনরা
বাঘাইছড়িতে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহতদের সনাক্ত করছেন স্বজনরা

এখানে যৌক্তিক বিশ্লেষণের খাতিরে এ প্রশ্ন জাগে, যদি উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লে. কর্ণেল পদমর্যাদার খোদ ব্যাটেলিয়নের সেনা অধিনায়ক-এর মত সামরিক কর্মকর্তা পর্যাপ্ত জনবল নিয়ে অভিযান চালিয়েও ১৫/২০ জনের ক্ষুদে একটি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে’ ঘেরাও করে ধরতে না পারেন, তাহলে এটা বুঝতে বাকী থাকে না এভাবে সেনা অভিযান চালিয়ে এ সমস্যার মোকাবিলা করা যায় না, সেটা সম্ভবও নয়। কথিত সংঘর্ষে নিহত ও পলাতক ‘সন্ত্রাসীরা’ সামরিক প্রশিক্ষণ ও শৃঙ্খলায় কতখানি উন্নত বা দুর্বল (স্মর্তব্য ’৭১ সালে মুক্তিবাহিনীর শৃঙ্খলায়ও অনেক ঘাটতি দুর্বলতা ছিল) কিংবা তারা ইউপিডিএফ না লারমা-সন্তু গ্রুপের সে প্রশ্নের চাইতেও এখানে প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, উক্ত ঘটনার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান অস্থিরতা আবার জনসমক্ষে উন্মোচিত হয়েছে। ‘পার্বত্য চুক্তি’র মাধ্যমে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান না হওয়ায় এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে নানাভাবে। এ গুরুতর সত্য উপলদ্ধি করতে সরকার, রাজনৈতিক নেতা ও নীতি নির্ধারকরা উপলদ্ধি করতে যত দেরী করবেন, দেশ ও জনগণের ক্ষতি হতে থাকবে ততধিক।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এখানে আরও একটি বিষয় এসে যায়, বাঘাইছড়িতে সেনা-‘সন্ত্রাসী’ সংঘর্ষ নিছক কাকতালীয় না অন্য কিছুর ইঙ্গিত বহন করে? তা নাহলে ‘জাতীয় শোক দিবসের’ দিনে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সেনাবাহিনী কেন উক্ত ঘটনা করতে গেল? কথিত ‘সন্ত্রাসীরা’ তো সেনাবাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ ছিল, তা সত্ত্বেও কেন অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা হলো? তাদের জীবিত ধরার চেষ্টা না চালিয়ে কেন হত্যাকাণ্ড ঘটানো হলো? তার নিগুঢ় অর্থ কী? অন্য দিন কি সন্ত্রাসী ধরার অভিযান চালানো যেত না? খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি-মানিকছড়ি-গুইমারায় তো একেবারে সেনা ক্যাম্পের পাশেই এলাকার দাগী মাস্তান-সন্ত্রাসীরা থাকে (যারা বোরকা নামে পরিচিত), তাদের বিরুদ্ধে তো কোন অভিযান পরিচালিত হয় না। সবাই জানে বিশেষ খাতির রয়েছে উভয়ের মধ্যে।

‘১৫ আগস্টে’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপথগামী সেনা কর্মকর্তাদের হাতে রাষ্ট্রপতি মুজিব পরিবার পরিজনসহ নিহত হয়েছিলেন, দিবসটির তাৎপর্য কি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনা কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেই? নাকি বাঘাইছড়িতে ‘সন্ত্রাসী’ মারার নামে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সেনাবাহিনীর একটি অংশ (যাদের পাকিস্তানের আইএসআই, জঙ্গী মতবাদের সমর্থক বলে সন্দেহ করা হয়) মুজিব তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অন্য বার্তা দিতে চায়? গত বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে রাঙ্গামাটির বগাছড়িতে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পের জওয়ানরা গুলি ছুঁড়ে আর পাহাড়িদের বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে বিজয় দিবস উৎযাপন করেছিল! দেশের ‘স্বাধীনতা’ ‘সার্বভৌমত্বের’ পাহারাদার ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর’ কর্মকাণ্ডের কী অপার মহিমা!!! এদেরই একটি অংশ কর্তৃক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতা, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ-বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর হায়দার, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবুল মঞ্জুরসহ অনেক উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা খুন হয়েছেন। সময় যতই গড়াবে আসল রহস্য নিশ্চয়ই একদিন জনগণের নিকট উন্মোচিত হবে।

**

১৭ আগস্ট রাতে ‘বিবিসি সংলাপ’ ও সাড়ে দশটায় রাতের ‘বিবিসি ফোন-ইন’ অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সেনা-‘সন্ত্রাসী’ সংঘর্ষের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি উত্থাপিত ও আলোচিত হয়েছে। সাধারণতঃ লোকে আর আগের মত বিবিসি শোনে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়েও বিবিসি থেকে কমই সংবাদ পরিবেশিত হয়। বহু ঘটনার কারণে বিবিসি’র আগের ক্রেডিবিলিটিও কমে গেছে, সে বিষয়ের অবতারণা আজকের প্রতিবেদনের উদ্দেশ্যও নয়।

ঐ দিন বিবিসি সংলাপে প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি প্রফেসর সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ব্যতিত সবাই কমবেশি গঠনমূলক ও বিবেচনাপ্রসূত কথা বলেছেন। ‘সময়ের প্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে’– আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এমন দায়ছাড়া কথাবার্তার সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন,‘সময়ের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধান হবে না। সেখানে মানবাধিকার লংঘন, নারী নির্যাতন, ভূমি অধিকার এবং স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান হবে না’–তার এ বক্তব্য উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের সমর্থন লাভ করেছে বুঝা যায় হাততালিতে। অন্যদিকে ব্যর্থতা ঢাকার চালাকি কথাবার্তায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহানের কাছে ধরা খেয়েছেন। তাতে আনিসুল হক সাহেবের এক রহস্যময় হাসি (ক্যামেরা-ম্যান মোক্ষম মুহূর্তটি তুলতে সক্ষম হন), তা দর্শক-শ্রোতারা বেশ উপভোগ করেছে।

সংলাপ অনুষ্ঠানে দর্শক সারিতে যে ক’জন সংখ্যালঘু জাতিসত্তার ছাত্র-ছাত্রী (পার্বত্য চট্টগ্রাম না সমতল বোঝা যায় নি) দেখা গেছে, তারা কেউ প্রশ্ন করেন নি। হলে তাদের উপস্থিতিও ছিল ¤্রয়িমান আর তারা ছিল আড়ষ্ট। পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতির মত এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে সঞ্চালক সংবেদনশীলতা দেখালেও তা নিয়ে আলোচনা করতে সক্ষম, এমন কাউকে অনুষ্ঠানে নিতে না পারাটা বিবিসি সংলাপ আয়োজকদের দুর্বলতা বলতে হবে।

অন্যদিকে একই দিন রাতে (১৭ আগস্ট) সাড়ে দশটায় ‘ফোন-ইন’ অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে সুমন মারমা আর রাঙ্গামাটি থেকে লেনিন চাকমা নামে দু’জন যোগ দিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন। কিন্তু ভাষাগত বা অন্য কোন কারণে তাদের উপস্থাপনা ছিল দুর্বল। দু’জনের কেউ আসল বিষয় পরিষ্কার করে তুলে ধরতে সক্ষম হন নি। বিবিসি’র শ্রোতা পাহাড়ে কমে গেছে, সেটাও একটি কারণ হতে পারে। ‘ফোন ইন’ অনুষ্ঠানে কয়েক জন জঙ্গী মনোভাবাপন্ন উগ্রবাদী শ্রোতা পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পক্ষে বলেছেন। অধিপতি আগ্রাসী বাঙালিদের মানসিকতা তাদের বক্তব্যে প্রতিফলিত হয়েছে। তারা হয়ত ‘পার্বত্য চুক্তি’ সম্পর্কে জানেন না, চুক্তিতে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের কথাও রয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষে এক শ্রোতা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়টি সংক্ষেপে জোরালো ও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। তার বিবেকবোধ ও মানবিকতা পাহাড়ি জনগণের সমর্থন লাভ করবে তাতে সন্দেহ নেই। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক উক্ত শ্রোতাকে আর সময় দিতে পারেন নি। উক্ত শ্রোতা দেশের গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন বৃহত্তর বাঙালি জনগণের অগ্রসর অংশটির মত তুলে ধরেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এবং সরকারের নীতির সমালোচনা করেছেন।

(১৯ আগস্ট ২০১৫)
—————————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার  করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More