দীঘিনালায় শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় হামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে পিসিপি’র বিক্ষোভ
সিএইচটিনিউজ.কম
চট্টগ্রাম: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালায় শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় বাঁধা, গুলি, মারধর ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার (১৬ মার্চ ) বিকাল ৩টায় বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম মহানগর ও চবি শাখার উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল চট্টগ্রাম মহানগর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হতে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে এসে এক সমাবেশের মাধ্যামে শেষ হয়।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি পলাশ চাকমা’র সভাপতিত্বে ও রসকিত চাকমার সঞ্চালনায় উক্ত মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এসিং মং মারমা, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জুপিটার চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর তথ্য ও প্রচার সম্পাদক বাসক চাক, চবি শাখার সদস্য অংকন চাকমা প্রমুখ।
এছাড়া সংহতি জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন গণমুক্তি ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন আহমেদ নাশু, মাওলানা ভাসাসী ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি, বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব অপু দাশ গুপ্ত, গণমুক্তি ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা রাজা মিয়া।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীঘিনালায় বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন করার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করাতে ২১ পরিবার ভিটে মাটি হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয় মানুষগুলোকে ঐ ভূমিতে চাষাবাদ ও প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ঐ পরিবারগুলো তাদের সহায় সম্পদ হারিয়ে যাযাবরের মতো জীবন যাপন করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবির ৫১ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর অন্যত্র স্থানান্তর. উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে নিজ জমিতে পুনর্বাসন ও গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে বিজিবির দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল ১৫ মার্চ দীঘিনালায় ভূমি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাধা দেয় এবং অংশগ্রহণকারীদের উপর হামলা চালায়। শেষে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পাহাড়ে অশান্তি ও রক্তপাতকে উস্কে দেয়। সেনা-পুলিশের হামলায় উক্ত হামলায় ২০ জন পাহাড়ি আহত হয়। বক্তাগণ এই হামলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে দীঘিনালার জনগণ চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। জনগণের আন্দোলনকে দমনের জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী গ্রামে গ্রামে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে।
বক্তারা অবিলম্বে দীঘিনালা জনগণের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে বিজিবি কৃর্তক বেদখল হওয়া জমি ফেরত দেয়া, গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গ্রামে গ্রামে বিজিবি ও সেনা টহল বন্ধ করে ঐ এলাকার আতংক বন্ধ করে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের সকল প্রকার ভূমি বেদখল, খুন, ধর্ষণ ও সেনা নির্যাতন বন্ধ করে ঐ অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
———————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।