নান্যাচরে মুখোশ-সংস্কার সন্ত্রাসী কর্তৃক এক ব্যক্তি মারধরের শিকার

0

নান্যাচর প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির নান্যাচর উপজেলার ২নং নান্যাচর সদর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ১৪ মাইল এলাকার সরিদাশপাড়া নামক গ্রামে সেনা মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ-সংস্কারবাদী সন্ত্রাসী কর্তৃক এক ব্যক্তি মারধরের শিকার হয়েছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। আজ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩) ভোরে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার হওয়া ব্যক্তির নাম রিন্টু চাকমা (২৯), পিতা- হক্কলক্কো চাকমা, গ্রাম- সরিদাশ পাড়া। তিনি পেশায় একজন দোকানদার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর ৫টার দিকে অটোরিক্সা (সিএনজি) যোগে মুখোশ-সংস্কারবাদী সন্ত্রাসীদের ৬ জনের একটি সশস্ত্র দল সরিদাশ পাড়ায় হানা দেয়। সন্ত্রাসীরা সবাই সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিল।

সন্ত্রাসীরা আসা মাত্র সরিদাশ পাড়ার বাসিন্দা রিন্টু চাকমার বাড়িটি ঘেরাও করে। পরে তারা বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে নিক্কে চাকমা নামে একজনকে খুঁজতে থাকে এবং বাড়িতে তল্লাশি করে। কিন্তু তাকে না সন্ত্রাসীরা বাড়িতে থাকা রিন্টু চাকমাকে ব্যাপক মারধর করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা নান্যাচর বাজারে নেয়ার জন্য ‘কলাছড়া’ বহনকারীসহ পথচারীদের আটকিয়ে রাখে। এতে পাড়ার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আজ নান্যাচর বাজারের সাপ্তাহিক হাটবার হওয়ায় স্থানীয় লোকজন নান্যাচর বাজারে যাচ্ছিলেন।

সরিদাশ পাড়াটি রাঙামাটি – খাগড়াছড়ি মূল সড়ক ঘেষা ও ঘিলাছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে গাড়ি যোগে ৮/১০ মিনিটের দুরত্ব।

পরে সকাল সাড়ে ৭টার সময় সন্ত্রাসীরা সরিদাশ পাড়া করুণা বন বিহার সামনের রাস্তা থেকে সিএনজিতে করে তাদের আস্তানা গুল্যাছড়ির দিকে চলে যায় বলে জানান স্থানীয়রা।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর উক্ত সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় ১৮ মাইল সোনারাম কার্বারী পাড়া ও ১৭ মাইল এলাকা রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে প্রকাশ্যে সশস্ত্র তৎপরতা চালায় দিনভর চাদাঁবাজি করে।

সন্ত্রাসীদের কারা মদদ ও নেতৃত্ব দেয়:

মূলত সেনাবাহিনীর নান্যাচর জোনের প্রত্যক্ষ মদদ ও সহযোগীতায় নব্যমুখোশ ও সংস্কারবাদীরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে। গত ৫ সেপ্টেম্বর নান্যাচর জোন কমাণ্ডারের মুখোশ ও সংস্কারবাদীদের সশস্ত্র গ্রুপের সর্দারদের সাথে গোপন বৈঠকের খবর সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত হয়।

এলাকায় এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নেতৃত্বদানকারীরা হলেন- নব্যমুখোশ দুর্বৃত্তদের মধ্যে চালু চাকমা (৪৩), পিতা- বুদলঙ্গিব চাকমা, গ্রাম-বেতছড়ি তালুকদার পাড়া, সাবেক্ষ্যং ইউপি এবং সংস্কারবাদীদের মধ্যে রূপম দেওয়ান (৪১) পিতা- মহানন্দ চাকমা, গ্রাম-বটবিল (বড়াদাম), বুড়িঘাট ইউপি, জ্ঞান বিকাশ চাকমা ওরফে ভুলো (৫৩), গ্রাম- পশ্চিম হাজাছড়ি, ঘিলাছড়ি ইউপি ও সশস্ত্র কমাণ্ডার লিটন চাকমা (বাড়ি দীঘিনালা)।

এদের মধ্যে রুপম দেওয়ান, ভুলো ও চালু চাকমারা নান্যাচর বাজারের যাত্রী ছাউনি (সেনা চেকপোস্ট) পার্শ্বে দ্বিতল ভবনে দলবলসহ অবস্থান করে থাকে। আর লিটন চাকমা ১০/১২ জন সশস্ত্র গ্রুপ নিয়ে গুল্ল্যাছড়ি কাদামলা (আমলকি) ঘাট এলাকায় অবস্থান করে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এই সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত নান্যাচর উপজেলা সদর এলাকা, নান্যাচর বাজার, নান্যাচর পুরাতন বাজার (হাসপাতাল এলাকা) লঞ্চঘাট, ডাকবাংলা ঘাট, কুকুরমারা, খাল্ল্যাবাড়ি, বউবাজার, বগাছড়ি রাস্তা মাথা, হর্টিকালচার সেন্টার, বোটঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে সশস্ত্র অবস্থায় চাঁদাবাজি করে থাকে। কিন্তু প্রশাসন তাদেরকে দেখেও না দেখার ভাণ করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয় না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More