পার্বত্য চট্টগ্রামে তিন মাসে ১২ জন পাহাড়ি নারী-শিশু ধর্ষণ, খুন ও নির্যাতনের শিকার

0

সিএইচটিনিউজ.কম ডেস্ক
Rapingপার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারীদের উপর নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, খুন, ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় শিশু ও প্রতিবন্ধীরাও বাদ যাচ্ছে না। সেটলার বাঙালিদের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কর্তৃকও পাহাড়ি নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। গত ৩ মাসে (৫ জানুয়ারী – ৫ এপ্রিল ২০১৪ পর্যন্ত) পার্বত্য চট্টগ্রামে কমপক্ষে ১২ জন নারী, শিশু ও কিশোরী ধর্ষণ, ধর্ষণের পর খুন, ধর্ষণ চেষ্টা, অপহরণ ও অপহরণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৫ জন। এ বছরের তিন মাসের হিসেবে ধর্ষণ, নির্যাতনের ঘটনা গত বছরের চেয়ে বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। আমাদের নিজস্ব সূত্র ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিন মাসে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে সংঘটিত ঘটনাবলী  সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরা হলো:

মানিকছড়িতে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিশুকে ধর্ষণ
গত ৫ জানুয়ারী খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের গিরচন্দ্র কার্বারী পাড়ায়(টিলা পাড়া) বাড়ির পাশ্ববর্তী জঙ্গলে আলু সংগ্রহ করতে গেলে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি মেয়ে শিশুকে (৯) ধর্ষণের শিকার হয়।  মানিকছড়ির ঢাকা শিবির নামক গ্রামের বাসিন্দা নুরুল হকের ছেলে ওবায়দুল হক(১৮) তাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ওই শিশুটি বাড়িতে ফিরে তার মাকে ঘটনাটি খুলে বললে এটি জানাজানি হয়।এরপর ওই শিশুটির পিতা কুমার সানু ত্রিপুরা স্থানীয় বাটনাতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুল হক-এর কাছে বিচার দিলে ১২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ, অঙ্গীকার পত্র ও ওবায়দুল হককে কয়েক বেত্রাঘাত দিয়ে মীমাংসা করে দেওয়া হয়।

নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড়ি স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ
গত ১৫ জানুয়ারি বুধবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ছাধুঅং পাড়ায় মধ্যম বাইশারী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে জসিম উদ্দিনে (২৮) কর্তৃক ১৩ বছরের পাহাড়ি স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়।।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই কিশোরী বৌদ্ধবিহারের মহড়ার মাঠে ঐতিহ্যবাহী শবনৃত্যের মহড়া শেষে বুধবার রাতে বাড়ি ফিরছিল। বাড়িতে পৌঁছার আগে জসীম উদ্দীন (২৫) নামের এক ব্যক্তি তাকে ধরে ঝোপের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি বাইশারী পুলিশ ফাঁড়িকে জানানো হলে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে ধর্ষক জসীমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা
গত ১৫ ফেব্রুয়ারী খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কমলছড়িতে দেবরতন চাকমার স্ত্রী সবিতা চাকমা(৩০) বাড়ির পার্শ্ববর্তী চেঙ্গী নদীর চরে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গেলে বালুবহনকারী বাঙালি ট্রাক্টর চালক ও তার সহযোগীদের কর্তৃক ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন। হত্যার পর তার লাশ টেনে হেঁচড়ে একটি সিম ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। পরে ঘটনার দিন বিকালের দিকে বিবস্ত্র অবস্থায় পুলিশ ও স্থানীয়রা তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় দেবরতন চাকমা মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি।

সাজেকের লক্ষ্মীছড়িতে সেনা সদস্য কর্তৃক এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ চেষ্টা
গত ১৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের লক্ষ্মীছড়ি সেনা ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার(সুবেদার) কাদের কর্তৃক এক পাহাড়ি নারী ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হন। ঘটনার দিন কাদের এক সহযোগীকে নিয়ে ক্যাম্পের পাশ্ববর্তী লক্ষ্মীছড়ি বাজারে (কয়েকটি দোকানের সমন্বয়ে গড়ে তোলা) লাকড়ি কিনতে গিয়ে  এ ঘটনা সংঘটিত করেন।  এ সময় ওই নারী বাড়িতে একাই ছিলেন এবং চাউল বাছাইয়ের কাজ করছিলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই নারী কোন রকমে পালিয়ে গিয়ে ইজ্জ্ত রক্ষা করতে সক্ষম হন।

মাটিরাঙ্গায় ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ
গত ২৫ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে খাড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার রামশিরা এলাকায় এক ১০ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক পাহাড়ি স্কুলছাত্রীকে দুই সেটলার কর্তৃক ধর্ষণ করা হয়।ঘটনার দিন দুপুরে ওই স্কুল ছাত্রী তরিতরকারী সংগ্রহ করতে বাড়ির পাশ্ববর্তী জমিতে যায়। এ সময় একা পেয়ে দুই সেটলার তারুমিয়া(৩৭) পিতা-লাল মিয়া, গ্রাম- করিম মাষ্টার পাড়া ও  আব্দুল খালেক(৪০), পিতা রহিম মিয়া, গ্রাম-মাষ্টার পাড়া তাকে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে তার চিৎকার শুনে আশে-পাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে।

মানিকছড়িতে এক পাহাড়ি তরুণী ধর্ষণের শিকার
গত ৭ মার্চ খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে এক পাহাড়ি তরুণী(১৯) তিন বাঙালি যুবক কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হয়।
জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী একজন গৃহ শ্রমিক। চট্টগ্রামে থেকে সে ছুটিতে বাড়ী ফিরছিল। কিন্তু তার গৃহকর্তা বাসে তুলে দেবার সময় বাসের ড্রাইভারকে বলে দিয়েছিল খাগড়াছড়ি নামিয়ে দিতে। তাই সে খাগড়াছড়ি থেকে মিনিবাসে করে মানিকছড়ি আসছিল।  মেয়েটি যে বাসে উঠেছিল সেটি ছিল রামগড়গামী। তাই বাস থেকে মেয়েটি জালিয়াপাড়াতে নামতে বাধ্য হয়। আর সেখান থেকে আবার একটা মানিকছড়ির বাসে উঠে, কিন্তু মেয়েটির কাছে বাসের পুরো ভাড়ার টাকা ছিল না। হেলপার তাকে গোবামারাতে নামিয়ে দেয়। গোবামারাতে বাঙালীদের কিছু দোকান আছে। মেয়েটি বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। একজন বাঙালী সেটলার, ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালায়, সে মেয়েটির কাছে এসে বলে যে সে মানিকছড়ি যাচ্ছে, মেয়েটি তার সাথে যেতে পারবে। সরল বিশ্বাসে মেয়েটি তার সাথে যেতে রাজী হয়। কিন্তু গোবামারা থেকে কিছুদূর যাবার পর বাঙালীটি মোটর সাইকেল থামিয়ে বলল, তার মোটর সাইকেল খারাপ হয়েছে। এরপর সে মোবাইল করে তার দুই বন্ধুকে সেখানে আসতে বলে। সেই দু’জন আসার পর পথের পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে তারা ধর্ষণ করে। ধর্ষণকারী বাঙালী সেটলাররা তাকে অজ্ঞান অবন্থায় সেখানে ফেলে যায়। জ্ঞান ফিরে এলে মেয়েটি কোনমতে উঠে এসে স্থানীয় লোকদের জানালে লোকজন ধর্ষণকারীদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রথমদিকে পুলিশ মামলা না নিয়ে, টাকা পয়সার মাধ্যমে বিষয়টিকে সেটেল করার চেষ্টা করে, পরে মেয়েটির অভিভাবক এবং পাহাড়ি নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিদের চাপের মুখে পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য হয়।
ধর্ষণকারী ওই তিন যুবক হলো-শামসুল হকের ছেলে মোটর সাইকেল চালক শহীদুল ইসলাম(২৫), সোহারাব হাওলাদারের ছেলে মোঃ মাহবুব আলম(২৭) ও ফজলুর ফরাজী ছেলে বেলাল হোসেন(২৪)।

পানছড়িতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টা
গত ১৪ মার্চ বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের মাছ্যছড়া এলাকায় ১৩ বছর বয়সী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক পাহাড়ি কিশোরী এক বাঙালি দুর্বৃত্ত কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়। জানা যায়, ঘটনার দিন লোগাং বাজার এলাকার বাসিন্দা মো: আয়াতুল্লাহ(৩৭) নামে এক সেটলার বাঙালি জঙ্গল থেকে বাঁশ আনতে গিয়ে মাছ্যছড়া গ্রামের চোখকালা চাকমার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার পিতা বাড়ির ভিতর ঘুমাচ্ছিলেন। মেয়েটির চিঁৎকার শুনে তিনি বেরিয়ে আসলে দুর্বৃত্ত আয়াতুল্লাহ পালিয়ে যায়।

রাঙ্গামাটির কাউখালীতে ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ  চেষ্টা
গত ২২ মার্চ সকাল ৭টায় রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের সুগারমিল পূর্ব আদর্শগ্রাম এলাকায়  ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন মুখে চেতনা নাশক লাগিয়ে দিয়ে ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মারমা স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণের চেষ্টা করে। অবশ্য এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে তার এ চেষ্টা ব্যর্থ হয়।  এ সময় শিহাব উদ্দিন ও তার সহযোগীদের হামলায় ওই স্কুল ছাত্রীর পিতাও আহত হন।

রাঙামাটির কাউখালীতে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া পাহাড়ি শিশু ধর্ষিত
গত ২৩ মার্চ বিকাল ৩টার দিকে রাঙামাটি’র কাউখালী উপজেলার ৪নং কলমপতি ইউনিয়নের তারাবুনিয়া এলাকায় বেলাল হোসেন নামক এক সেটলার বাঙালি কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মারমা মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। তারাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ওই ছাত্রী প্রতিদিনের মতো স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্কুল থেকে প্রায় ৩০ গজ দূরে কলমপতি ছড়ার পাড়ে তারাবুনিয়া ইট ভাটার শ্রমিক বেলাল হোসেন ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়।
স্কুল ছুটির পরও বাড়িতে না ফেরায় পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর বিকাল সাড়ে চারটার দিকে অজ্ঞান অবস্থায় শিশুটিকে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে জ্ঞান ফিরে মেয়েটি বেলাল হোসেন ধর্ষণ করেছে বলে জানালে এলাকাবাসী ধর্ষক মো: বেলালকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

মহালছড়িতে ভারতী চাকমাকে গণধর্ষণের পর হত্যা
গত ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরার পথে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার ক্যায়াংঘাট ইউনিয়নের করল্যাছড়ি হেডম্যান পাড়ার মৃত অজয় কুমার চাকমার মেয়ে ভারতী চাকমাকে গণধর্ষণের পর এসিড নিক্ষেপ করে হত্যা করে সেটলার বাঙালিরা। এ ঘটনার ৩দিন পর ২৯ মার্চ পশ্চিম ক্যায়াংঘাটের একটি আমাবাগান থেকে তার বিবস্ত্র ও বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ভারতী চাকমার পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ সনাক্ত করা হয়।
এঘটনায় ভারতী চাকমার বড়ভাই সঞ্চয় চাকমা সন্দেহজনক ৫ জনকে আসামী করে মহালছড়ি থানায় মামলা দায়ের করেছে। এরা হলেন-পাগজ্যাছড়ি গুচ্ছগ্রামের তারামিয়া, পিতা- তমিজ উদ্দিন, ইনসাফ আলী, পিতা-অজ্ঞাত ও কালোপাহাড় গুচ্ছগ্রামের জহুর আলী, পিতা-ফয়সাল মিয়া, জাহিদ, পিতা-অজ্ঞাত ও নুরুন্নবি। এর মধ্যে পুলিশ জহুর আলীকে গেফতার করলেও বাকীরা পলাতক রয়েছে।

লক্ষ্মীছড়িতে বাক প্রতিবন্ধী এক পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণ
গত ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি উপজেলার ছোটধুরুং মুখ পাড়ার কার্বারী নিজো চাকমার বাক প্রতিবন্ধী মেয়েটি(১৫) দুই সেটলার যুবক কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়।  বাড়ির পার্শ্ববর্তী ছড়া থেকে পানি আনতে গেলে তাকে একা পেয়ে ময়ুরখীল গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মো: আবুল কাশেম এর ছেলে মো: সজীব(১৮) ও মো: নাসির মাষ্টারের ছেলে মো: শরীফ(১৫) তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় স্কুল থেকে ফেরার পথে দুই স্কুল ছাত্র মেয়েটির চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। অপরাধীদের সনাক্ত করা হলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে অস্ত্রের মুখে এক পাহাড়ি গৃহবধুকে অপহরণ
গত ৫ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু গর্জনবনিয়া পাড়া থেকে এক পাহাড়ি গৃহবধু (২৮) একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত কর্তৃক অপহরণের শিকার হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার দিকে মূখোঁশপরা একদল দুর্বৃত্ত রেজু গর্জনবনিয়া এলাকার নিজ বাড়ীতে একা পেয়ে ওই গৃহবধুকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পাহাড়ি যুবক মোবাইল ফোনে জানান, দীর্ঘদিন আগে গর্জনবনিয়া এলাকার ছৈয়দ হামজা নামে এক ব্যক্তি তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। উক্ত প্রস্তাবে সে রাজী না হওয়ায় স্বামীর অনুপস্থিতিতে ছৈয়দ হামজার নেতৃত্বে একই এলাকার একাধিক অস্ত্র মামলার আসামী মোক্তার আহমদ সহ ৫/৬জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে তাকে অপহরণ করেছে।
এব্যাপারে ঘুমধুম পুলিশ ফাড়ির আইসি বাচ্চু মিয়া অপহরণের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অপহরণের ঘটনা শুনলেও কে বা কারা এ ঘটনাটি করেছে আমরা তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। অপহৃতাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা গেছে কিনা তা জানা যায়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত এসব ঘটনায় অপরাধীরা প্রায়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় অথবা গ্রেফতার হলেও অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যায়। অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি না হওয়ায় তারা আবারো অপরাধ সংঘটিত করতে উৎসাহিত হচ্ছে- এমনতাই অভিযোগ করেছেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন নারী সংগঠন ও সচেতন মহল।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More