বাঁশ উৎপাদন বাড়াতে বাঁশের কোড় (বাচ্ছুরি) নিধন বন্ধের আহ্বান ইউপিডিএফের
সিএইচটিনিউজ.কম
দীঘিনালা প্রতিনিধি : পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঁশ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বাঁশের কোড় বা বাচ্ছুরি (ত্রিপুরা ভাষায় মেউয়া, মারমা ভাষায় নাহাঙ) নিধন বন্ধ করতে সর্বসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)।
এ বিষয়ে ইউপিডিএফের মিইনী-কাচলং ইউনিট, মিইনী-কাজলং গাছ ও বাঁশ ব্যবসায়ী সমিতি ও হেডম্যান-কার্বারী এসোসিয়েশন কর্তৃক যৌথভাবে প্রচারিত এক প্রচারপত্রে বলা হয়, বাঁশ অতি মূল্যবান জাতীয় সম্পদ। দৈনন্দিন জীবনে এটি বিভিন্ন কাজে লাগে। এই সম্পদকে রক্ষা করার জন্য কাউকেই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। সরকারের বনবিভাগ ও এনজিওগুলো পরিবেশ সম্পর্কে অনেক কথা বললেও বাঁশের কোড় নিধন বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। অবচেতনভাবে প্রতি বছর নির্বিচারে বাচ্ছুরি বা বাঁশের কোড় নিধন করে মূল্যবান বাঁশ সম্পদকে ধ্বংস করা হচ্ছে। ফলে দিন দিন মহা মূল্যবান বাঁশ সম্পদ (বাঁশ বাগান) উজার হয়ে যাচ্ছে।
প্রচারপত্রে বলা হয়, নিকট অতীতেও পার্বত্য চট্টগ্রাম নানা প্রজাতির গাছ ও বাঁশে পরিপূর্ণ ছিল। তখন বৃষ্টিপাতও ঠিকমতো হতো। জুমিয়া কৃষকরা জুম চাষে ভাল ফসলও ফলাতে পারতো। জীবন ধারণে প্রকৃতি তখন যথেষ্ট সহায়ক ছিল। কিন্তু অপরিকল্পিত জুমচাষ ও গাছ-বাঁশ উজার হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বন-জঙ্গল শূণ্য হয়ে গেছে। এ সময়কার গভীন ঘন গাছ ও বাঁশের জঙ্গলে আচ্ছাদিত পাহাড়গুলো বর্তমানে ন্যাড়া পাহাড়ে পরিণত হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, এক শ্রেণীর অসাধু বাচ্ছুরি সংগ্রহকারী রিজার্ভ ফরেস্ট, বন-জঙ্গল ও রোপিত বাঁশের বাগান থেকে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ বাচ্ছুরি সংগ্রহ করে হয় নিজেরা তরকারী হিসেবে ব্যবহার করছেন নতুবা বাজারে নাম মাত্র দামে বিক্রি করছেন। এভাবেই বাচ্ছুরি সংগ্রাহক, ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সবাই মিলে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার বাঁশ সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। বাচ্ছুরি নিধন বা সংগ্রহ নিয়ন্ত্রণ হলে কোটি কোটি টাকার বাঁশ সম্পদ রক্ষা করা ও অর্থনৈতিকভাবেও অনেক লাভবান হওয়া যাবে এবং পরিবেশগত প্রাকৃতিক ভারসাম্যও রক্ষা পাবে।
প্রচারপত্রে, বাঁশ সম্পদ রক্ষার্থে প্রতিবছর এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত সকল প্রজাতির বাঁশের কোড় বা বাচ্ছুরি সংগ্রহ, তরকারী হিসেবে ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবসা সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য গ্রামের হেডম্যান, কার্বারী, এলাকার জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ক্লাব-সমিতি সহ দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সর্বসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, বাচ্ছুরি নিধন বা সংগ্রহ বন্ধ করুন, জাতীয় বাঁশ সম্পদকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করুন; বাঁশের উৎপাদন বাড়ান ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হোন; নিজে বাচ্ছুরিকে তরকারী হিসেবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যকেও বিরত রাখতে উৎসাহিত করুন।
—————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।