মহালছড়ি তান্ডবলীলার ১১ বছর আজ
সিএইচটিনিউজ.কম
আজ ২৬ আগস্ট ২০১৪ খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে সেনা-সেটলার কর্তৃক তান্ডবলীলার ১১ বছর পূর্ণ হলো। ২০০৩ সালের এই দিনে সেনা-সেটলাররা মহালছড়ি উপজেলার বাবু পাড়া সহ ৯টি পাহাড়ি গ্রামে হামলা চালিয়ে সাড়ে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। হামলাকারীরা প্রবীণ মুরুব্বী বিনোদ বিহারী খীসা ও আট মাস বয়সী শিশু কিরিতনকে হত্যা করে। এছাড়া হামলাকারীরা ৯ জন পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ, ৪টি বৌদ্ধ মন্দির পুড়ে দেয় ও বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুর করে এবং প্রতিটি গ্রামে ব্যাপক লুটপাট চালায়। লাঞ্ছিত হন এক বৌদ্ধ ভিক্ষুও। সেনা-সেটলারদের এ আক্রমণে প্রায় ৫০ জন পাহাড়ি আহত হয়। ১৯৯৭ সালের চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রামে এত ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার এটিই প্রথম ঘটনা। এরপর আবারো বহু হামলার ঘটনা ঘটেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে।
এ বর্বরাচিত হামলার ১১ বছর পার হলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলস্বরূপ পার্বত্য চট্টগ্রামে বার বার এ ধরনের হামলা সংঘটিত হচ্ছে। ২০০৮ সালে ২০ এপ্রিল সাজেকে, ২০১০ সালে ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি সাজেক ও ২৩ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি সদরে, ২০১১ সালে ১৭ এপ্রিল রামগড়ের শনখোলা পাড়ায়, ২০১২ সালে ২২ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি সদরে ও ২০১৩ সালে ৩ আগস্ট মাটিরাঙ্গার তাইন্দংয়ে বর্বর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করতে তাদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত প্রতিটি হামলায় সেটলারদের সাথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জড়িত থাকে। মহালছড়ি হামলার ঘটনায়ও তার কোন ব্যতিক্রম ছিল না। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনা, পুলিশ, বিডিআর পাহাড়ি জনগণের জন্য নিরাপত্তা প্রদানকারীর ভূমিকা পালন করে না। যদি তারা সেটা করতো তাহলে মহালছড়িসহ অন্যান্য জায়গায় এ ধরনের ঘটনা নিশ্চয় ঘটতে পারতো না।
কাজেই, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা বন্ধে সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আর জনগণের উচিত হবে নিজেদেরকে সংগঠিত করে এসব হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।