মাটিরাঙ্গায় সেটলার হামলায় ৪০ পরিবার পাহাড়ি গ্রাম ছাড়া – ইউপিডিএফের নিন্দা
টাকার মনি পাড়ার বাসিন্দারা জানান, ‘রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে গোমতি বাজারের পাশ্ববর্তী বান্দরছড়া থেকে ১৫০-২০০ জন সেটলার আমাদের গ্রামে হামলা চালায়। তারা আমাদেরকে দা, লাঠি-সোটা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। আমরা গ্রামের সবাই ভয়ে যে যেভাবে পারি জঙ্গলে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছি। বর্তমানে আমরা জঙ্গলে না খেয়ে কষ্টকর অবস্থায় রয়েছি। ভয়ে গ্রামে যেতে পারছি না। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তাও জানতে পারছি না।’
তাদেরকে নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে, জায়গা-জমি বেদখল করতে ও তাদের ধন-সম্পদ লুটপাট করতে সেটলাররা এ হামলা চালিয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
হামলায়র শিকার গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সেটলাররা আমাকে নানা হয়রানি করছে। বেশ কয়েকবার বিজিবি সদস্যরা আমার বাড়ি ঘেরাও করেছে। প্রায় ২/৩ মাস যাবত আমি ঠিকমত বাড়িতে থাকতে পারছি না।’
ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠক প্রদীপন খীসা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের জানমালের নিরাপত্তাসহ পুনর্বাসনেরও দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি মাটিরাঙ্গায় পাহাড়িদের উপর হামলা ও নির্যাতন বেড়ে গেছে। গত এপ্রিলে বৈসাবি উৎসবের কয়েক দিন আগে ২ ও ৫ এপ্রিল মাটিরাঙ্গা উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের প্রাণ কুমার পাড়ায় পর পর দু’বার হামলা চালানো হয়েছিল। এ সময় গ্রামের পুরো ২৭ পরিবার ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এছাড়া প্রায় প্রতিদিন নিরীহ পাহাড়িদের আটক, নির্যাতন, ভীতি প্রদর্শন ও বাড়ি ঘেরাও-এর ঘটনা ঘটছে।’
মাটিরাঙ্গা এলাকায় পাহাড়িদেরকে সব সময় ভয়ভীতি ও আতঙ্কের মধ্যে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, পাহাড়িদের জায়গা জমি বেদখলই এই ধরনের পরিস্থিতি জারী রাখার প্রধান লক্ষ্য।
তিনি সরকারকে বহিরাগত সেটলারদের উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাশ টেনে ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেন, তা না হলে মাটিরাঙ্গা এলাকায় পাহাড়িরা যে কোন সময় ভয়াবহ হামলার শিকার হতে পারে।