মাটিরাঙ্গার গোমতিতে পাহাড়ি বাঙালি সমঝোতা: ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার, গোমতি বাজার বয়কট প্রত্যাহার

0
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
 
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি ইউনিয়নে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনকল্পে পাহাড়ি ও বাঙালি নেতৃবৃন্দের মধ্যে সাত দফা সমঝোতা হয়েছে। গত ৮ জুলাই সোমবার খাগড়াছড়ির স্বনির্ভরস্থ ঠিকাদার সমিতি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উক্ত সমঝোতা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল হক, গোমতি ইউনিয়নের মেম্বার মো: রফিকুল ইসলাম, ইউপিডিএফ মাটিরাঙ্গা উপজেলা ইউনিটের সংগঠক চন্দন চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জিকো ত্রিপুরা।
সমঝোতা মোতাবেক গোমতি এলাকার টাকার মনি পাড়া ও প্রাণ কুমার পাড়ায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পাহাড়ি পরিবারকে হামলায় জড়িত ব্যক্তিগণ আগামী এক মাসের মধ্যে অর্থা ৮ আগস্ট ২০১৩-এর মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবেন। গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাঙালি সমাজ, জনপ্রতিনিধি ও মুরম্নব্বীগণ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। এলাকার জনগণের বিশেষতঃ পাহাড়িদের নিরাপত্তার স্বার্থে পাহাড়ি বাঙালি মিলে একটি ‘নিরাপত্তা কমিটি’ গঠন করা হবে। বাঙালি মুরুব্বী ও জনপ্রতিনিধিগণ ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি পরিবারদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ও দুঃখ প্রকাশ করবেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কোন অন্যায় হবে না এই মর্মে দৃঢ় অঙ্গীকারপূর্বক পাহাড়িদেরকে আশ্বস্ত করবেন। পঞ্চসেন ত্রিপুরাকে হত্যার প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম গোমতি বাজারে ছাত্র-যুব গণসমাবেশ করবে। এক্ষেত্রে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও মুরুব্বীগণ সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবেন। সমঝোতা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য আগামী ৩০ জুলাই রিভিউ মিটিং হবে। সমঝোতা স্বাক্ষর হওয়ার পর থেকে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম গোমতি বাজার বয়কট কর্মসূচি প্রত্যাহার করবে।উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন গোমতি বাজারে অন্যায়ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পূর্ব-ঘোষিত সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে এবং বিজিবি কর্তৃক বেআইনীভাবে গ্রেফতার সুশান্ত ত্রিপুরা ও অমল ত্রিপুরার মুক্তি ও পাহাড়ি গ্রামে সেটলার হামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য গোমতি বাজার বয়কটের ডাক দেয়া হয়।

এরপর ১৮ জুন বিনা উস্কানিতে সেটলারদের একটি অংশ বিনা উস্কানিতে গোমতি এলাকায় টাকার মনি পাড়ায় হামলা চালালে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি আরো জটিল রূপ নেয়। এ সময় ৪০ পরিবার পাহাড়ি ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পরে প্রায় বিশ দিন পর স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল হক ভবিষ্যতে আর এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটবে না মর্মে আশ্বাস দিলে উচ্ছেদ হওয়া পাহাড়িরা নিজ গ্রামে ফিরে আসেন।

এর আগে ২ ও ৫ এপ্রিল একইভাবে প্রাণ কুমার পাড়ায় সেটলাররা হামলা চালালে ২৭ পরিবার পাহাড়ি গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। অবশ্য পরে তারাও গ্রামে ফিরে আসেন।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More