বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের নান্যাচর সফর
রমেল চাকমার হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি এলাকাবাসীর
নান্যাচর: রমেল চাকমার বাবা বিনয় কান্তি চাকমা, তার পরিবার ও এলাকাবাসী সেনা হেফাজতে রমেল চাকমার মৃত্যুর জন্য দায়ি ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
আজ ১ মে ২০১৭ সোমবার বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি দল পিসিপি নেতা ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে নান্যাচর সফরে গেলে তারা এ দাবি জানান।
তদন্ত দলের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা, কমিশনের রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ের অভিযোগ ও তদন্ত বিভাগের উপপরিচালক মো: গাজী সালাউদ্দীন এবং রাঙামাটি জেলার এএসপি জাহাঙ্গীর আলম।
আজ সকালে তারা নান্যাচরের পূর্ব হাতিমারা (পূর্ব হ্ডেমারা) গ্রামে গিয়ে রমেল চাকমার বাবা বিনয় কান্তি চাকমা, তার পরিবারের সদস্য, রমেল চাকমার বন্ধু মিলন চাকমা ও এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের সাক্ষাতকার নেন।
বিনয় কান্তি চাকমা তার ছেলে রমেল চাকমার মৃত্যুর জন্য দায়ি ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করে বলেন, তার ছেলের লাশ তাকে দেয়া হয়নি। কমিশন সদস্যদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তিনি রমেল চাকমার বন্ধু মিলন চাকমার কাছ থেকে রমেলের গ্রেফতারের সংবাদ পান।
তিনি কমিশনকে বলেন তাকে রমেল চাকমার লাশ হস্তান্তর করা হয়নি, সে কারণে তার পরিবার ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী লাশ দাহ করতে পারেননি। আর্মিরাই লাশ কেড়ে নিয়ে পুড়ে ফেলে বলে তিনি জানান।
মিলন চাকমা তদন্ত দলকে জানান গত ৫ এপ্রিল সকাল দশটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপজেলা কার্যালয়ের গেটের সামনে থেকে রমেলকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তিনি রমেল চাকমার সাথে ছিলেন। ‘আর্মিরা রমেল চাকমার নাম জিজ্ঞেস করে এবং রমেল তার নাম বললে সঙ্গে সঙ্গে আর্মিরা তাকে ধরে নিয়ে যায়,’ বলেন মিলন চাকমা।
রমেল চাকমার বড় বোন মিত্রা চাকমা কমিশনকে জানান ১৭ এপ্রিল সর্বশেষ তার ভাইয়ের সাথে তার ফোনে কথা হয়েছে। এ সময় রমেল তাকে জানান যে তিনি ভালো আছেন।
বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার অংসাপ্রু মারমা তার সাক্ষাতকারে কমিশনকে বলেন, তিনি ২০ এপ্রিল চট্টগ্রামে রমেল চাকমার লাশ আনতে যান এবং এ সময় তার দেহে নির্যাতনের দাগ দেখতে পান।
তিনি জানান, ‘আমরা লাশ নিয়ে বুড়িঘাট পৌঁছলে আর্মিরা লাশটি কেড়ে নেয়। সেদিন রাতে তারা লাশটি জাফর সওদাগরের বাড়িতে রাখে।’
ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার যুগেন্দ্র চাকমা জানান তিনিও রমেলের লাশ আনতে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন এবং রমেলের শরীরে নির্যাতনের দাগ দেখতে পেয়েছিলেন।
তিনি বলেন লাশ দাহ করার সময় রমেলের মা বাবা আত্মীয় স্বজন কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
কমিশনের তদন্ত দলের সাথে রাঙামাটি থেকে ৫ জন সাংবাদিক ছিলেন বলে জানা যায়। পূর্ব হাতিমারায় প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষীদের সাক্ষাতকার নিয়ে তদন্ত দলটি দুপুর একটার দিকে রাঙামাটি ফিরে যায়।
———————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।