সরকার ও সেনাবাহিনীর বাধার মুখে ইউপিডিএফ এর এক যুগ পূর্তি পালিত

0

ডেস্ক রিপোর্ট, সিএইচটিনিউজ.কম
সরকার ও সেনাবাহিনীর বাধার মুখে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন জোরদার করার দৃপ্ত অঙ্গীকার গ্রহণের মধ্য দিয়ে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর যুগ পূর্তি পালিত হয়েছে এ উপলক্ষে আজ ২৬ ডিসেম্বর তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে পার্টির বিভিন্ন ইউনিটসহ ঢাকা ও চট্টগ্রামে পার্টি পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মত বিনিময়, নৌকা মিছিল ও শিশু র‌্যালীর আয়োজন করা হয়েছেরাঙামাটির মানিকছড়িতে অফিস উদ্বোধনসহ গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচী পালন না করার জন্য শেষ মুহুর্তে জেলা প্রশাসন থেকে এক নির্দেশ জারী করা হয়৷ সেনা সদস্যরা সকাল থেকে মানিকছড়ি ও কুদুকছড়িতে অবস্থান নেয়, অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা লোকজনকে বিভিন্ন স্থানে আটকিয়ে রাখে ও তাদের শরীর তল্লাশী করে৷ সেনারা জুরাছড়িতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জুরাছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি মহারঞ্জন চাকমাকে গ্রেফতার করে এবং লোকজনকে সুভলং-এ পার্টির গৃহীত কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেয় নান্যাচরের বিভিন্ন স্থানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে ও বুড়িঘাট থেকে নান্যাচরে বোট মিছিল করতে ও পার্টি পতাকা উত্তোলনে বাধা দেয়া হয়েছে৷ রাজস্থলীতে সেনারা পার্টি অফিসে উত্তোলিত পতাকা নামিয়ে দেয় ও আলোচনা সভার ব্যানার কেড়ে নেয় রাঙামাটির সাজেকেও পার্টির এক যুগ পূর্তির অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে সেনারা ঘোষণা করেছে৷ এছাড়া খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে বাধা দেয়া হয়েছে। 

জেলা প্রশাসনের চিঠি: ইউপিডিএফ-কে দেয়া রাঙামাটি জেলা ম্যাজেস্ট্রেট এর পক্ষে সহকারী কমিশনার মোঃ মনিরুজ্জামান স্বারিত এক চিঠিতে (স্মারক নং: ২৯৯.১০২.০০২.০০০.০০১.২০১০.৪৫৬ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১০ খৃষ্টাব্দ) বলা হয়েছে ইউপিডিএফ-এর “এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে প্রস্তাবিত বিভিন্ন কর্মসূচীসহ মানিকছড়িতে কার্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম/কর্মসূচী আয়োজন করা হলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী দলসমূহের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কাসহ স্থানীয় আইন শৃক্সখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে পারে মর্মে আইন শৃক্সখলা রাকারী বাহিনীর নিকট হতে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে জানা গেছে

এমতাবস্থায় আগামী ২৬/১২/২০১০ খৃষ্টাব্দ তারিখে অনাকাক্সখিত ঘটনা/পরিস্থিতি এড়ানোর লক্ষ্যে এবং আইন শৃংখলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার স্বার্থে তাঁর (অর্থাত্‍ সোনামনি চাকমা, জেলা প্রশাসনকে দেয়া অবগতি পত্রে স্বাক্ষরকারী) দলের গৃহীত সকল কর্মসূচী থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো

উক্ত চিঠি ২৫ তারিখ লেখা হলেও ২৬ তারিখ সকালে কুদুকছড়িস্থ ইউপিডিএফ কার্যালয়ে প্রশাসনের নিজস্ব রানার মারফত পৌঁছে দেয়া হয়

আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো বিভিন্নস্থানে ইউপিডিএফ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের খবর:

খাগড়াছড়ি : ইউপিডিএফ-এর এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে সকাল ৭টায় স্বনির্ভরস্থ ইউপিডিএফ-এর খাগড়াছড়ি জেলা অফিসে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিপ্লবী সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়৷ এরপর শহীদদের উদ্দেশ্যে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পন এবং শিশু র‌্যালীর আয়োজন করা হয়

UPDF 10th anniveersary2জিপগাড়ি যোগে অনুষ্ঠিত শিশু র্যালীটি পেরাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে শুরু হয়ে স্বনির্ভর, খবংপুজ্জ্যা, শাপলা চত্বর, চেঙ্গী স্কোয়ার, মহাজন পাড়া ঘুরে আবার পেরাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়৷ র‌্যালিতে শিশুরা “পূর্ণস্বায়ত্তশাসন কায়েম করে চাই মানুষ হিসেবে পরিপূর্ণ বিকাশের গ্যারান্টি, ভয়-ভীতিহীন মুক্ত পরিবেশে হেসে-খেলে বেড়ানোর স্বাধীনতা প্রতিটি শিশুর জন্মগত অধিকার, আমরা সে অধিকার চাই, ভিটাছাড়া পিতৃ-মাতৃহারা করে আমাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখা যাবে না, জীবনের বিনিময়ে অধিকার ছিনিয়ে আনবোই” লেখা ব্যানার বহন করে৷ র্যালীতে বিভিন্ন জায়গা থেকে তিন শর মতো শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে

নান্যাচর (রাঙামাটি):  ইউপিডিএফ-এর এক যুগ পূর্তি উপল্যে সকালে নান্যাচরে নৌকা মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়৷ নৌকা মিছিলে ১২টি ইঞ্জিন-চালিত বোট ও ২৭৬টি নৌকায় দুই হাজার লোকজন অংশ নেন৷ এর মধ্যে বন্দুক ভাঙা থেকে ১২৩টি, বুড়িঘাট থেকে ৬৫টি, ভাঙামুরা থেকে ৪৬টি, টিএন্ডটি ফিরিঙ্গি পাড়া থেকে ৫ ও জগনাতলী থেকে ২৭টি নৌকা-বোট মিছিল করে নান্যাচর রওনা দেয় কিন্তু সেনারা বুড়িঘাট থেকে রওনা দেয়া মিছিলটি কমতলিতে আটকায় সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় বিনয়ন চাকমা এতে বক্তব্য দেন

মিছিল শেষে নান্যাচর ডাকবাংলা ঘাটের কাছে এক ভাসমান সমাবেশের জন্য সকল নৌকা মিলিত হয়৷ কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন সেখানে সমাবেশ করতে বাধা দেয় পরে মিছিলকারীরা নান্যাচার বাজারের দক্ষিণে মাছছড়ি বিলে নৌকা সমাবেশ করে এতে বক্তব্য দেন সুশীল জীবন চাকমা, বিনয় কৃঞ্চ খীসা, বিঘ্ন খীসা, যুথিকা চাকমা ও তাপুমনি চাকমা প্রমুখ৷

সুবলং (রাঙামাটি) : এক যুগ পূর্তিতে সুবলং-এ পার্টির নব নির্মিত অফিস উদ্বোধন করা হয়৷ এ উপলক্ষে সুবলং বাজারস্থ পার্টি অফিসে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়৷ ইউপিডিএফ নেতা নিহার বিন্দু চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক কমিটির চট্টগ্রাম শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্য হোসেন খান৷ এছাড়া বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ নেতা অনিমেষ চাকমা, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নেতা এডভোকেট আমীর আব্বাস, কথা সাহিত্যিক ও গল্পকার আহমেদ জসিম, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কণিকা দেওয়ান, সুবলং ইউপি চেয়ারম্যান বিহারী রঞ্জন চাকমা, জুরাছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি চাকমা, দুমদুম্যা ইউপি চেয়ারম্যান রাজিয়া চাকমা প্রমুখ

প্রধান অতিথির ভাষণে হোসেন খান বলেন, সন্তু লারমা ব্যর্থ হয়েছেন৷ তাই এখন দরকার হয়েছে ইউপিডিএফকে শক্তিশালী করা৷ তিনি পাহাড়িদের মৌলিক দাবিগুলো আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করার ওপর জোর দেন৷

মানিকছড়ি(খাগড়াছড়ি): পার্টির এক যুগ পূর্তিতে মানিকছড়িতে ইউপিডিএফ এর অফিস উদ্বোধন ও আলোচনা সভা হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু জেলা প্রশাসন উক্ত অনুষ্ঠানের ওপর লিখিতভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷ মানিকছড়ি ও কুদুকছড়ির বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক সেনা ও ভিডিপি মোতায়েন করা হয় এবং বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে যোগ দিতে আসা লোকজনকে আটকানো হয়৷ ইউপিডিএফ-এর কর্মি সমর্থকরা কুদুকছড়ি বাজারে সমাবেশ করতে চাইলে সেনারা বাধা প্রদান করে৷ তাদের সাথে প্রচণ্ড বাক-বিতণ্ডার পর দুপুরের দিকে ইউপিডিএফ কুদুকছড়ি বাজারের পাশে হাফ-বাজার নামক স্থানে সমাবেশ করতে সম হয়৷ এতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের নেতা ভূলন ভৌমিক, বিকি মজুমদার ও রিকো চাকমা৷

সাজেক (রাঙামাটি) : পার্টির একযুগ পূর্তি উপল েসকাল ১১টায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়গঙ্গারাম দোর-এ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সাজেক ভূমি রা কমিটির আহ্বায়ক জ্ঞানেন্দু চাকমা৷ এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, গঙ্গারাম গ্রামের জ্যোতিলাল কার্বারী, সাজেক নারী সমাজের আহ্বায়ক অম্পিকা চাকমা, সাজেক ভূমি রা যুব কমিটির আহ্বায়ক নিমেষ শান্তি চাকমা, সাজেক ইউনিয়নের মেম্বার জ্যোত্‍স্না রাণী চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি বিনয় চাকমা, এগোজ্যাছড়ি গ্রামের কার্বারী নতুন জয় চাকমা, তালকুম্বা গ্রামের মুরুব্বী পরিমল চাকমা, ইউপিডিএফ-এর দিঘিনালা-মারিশ্যা এলাকার সংগঠনক নতুন কুমার চাকমা ও সাজেক এলাকার প্রতিনিধি কাঞ্চন চাকমা৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ-এর সাজেক ইউনিটের সদস্য আকাশ চাকমা৷

বান্দরবান : ইউপিডিএফ বান্দরবান ইউনিটের উদ্যোগে বালাঘাটায় সকালে এক সমাবেশ ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়৷ পার্টির বালাঘাটা অফিসে ছোটন তঞ্চঙ্গ্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতা বিদু্যত্‍ ভৌমিক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুনায়েদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য এসিমং মারমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক অর্থ সম্পাদক প্রুসিংথোয়াই মারমা, পিসিপি জেলা কমিটির অন্তর মারমা ও সদস্য রূপন মারমাউপস্থাপনা করেন বিক্রম তঞ্চঙ্গ্যা৷ আলোচনা শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বালাঘাটা বাজার প্রদণি করে

এছাড়া, লংগদু, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, কাউখালির ঘাগড়া, বেতবুনিয়া, উল্ল প্রাইমারী স্কুল ও কাউখালি সদর, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, লক্ষ্মীছড়ি, পানছড়ি, দিঘীনালা, মহালছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে

পোস্টার ও ফেস্টুন : এর আগে ২৫ ডিসেম্বর রাতে খাগড়াছড়ির কমলছড়ি, বটতলী, কৃষি গবেষণা, মধুপুর, গোয়ামাহাদ, খবংপুজ্জ্যা, স্বনির্ভর, গিরিফুল, শিবমন্দির, রাঙামাটির মানিকছড়ি, কুদুকছড়ি, নান্যাচর, সুবলং, জুরাছড়ি, কাউখালি ও বান্দরবানের জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় দর্শনীয় স্থানসমূহতে পোস্টার, দলীয় পতাকা উত্তোলন ও বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত রঙ-বেরঙের ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে

ইউপিডিএফ-এর নিন্দা : ইউপিডিএফ-এর সভাপতি প্রসিত খীসা পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে বাধা দেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেনতিনি সরকারের অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট আচরণের কড়া সমালোচনা করে বলেন, এভাবে সংবিধান-স্বীকৃত বাক-স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে মিলিত হবার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে ইউপিডিএফ-এর নেতৃত্বে পরিচালিত জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে কখনোই দমন করা যাবে না৷ তিনি বলেন, “সরকার সাপুড়ের মতো ভূমি কমিশন ও চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটিকে দিয়ে খেলা খেলছে৷ কিন্তু এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না৷” তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন আইন ও কমিশনের মামলার শুনানী প্রত্যাখ্যান করে বলেন, প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান ও বিভিন্ন সময়ে সেটলারদেরকে দেয়া অবৈধ ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল পূর্বক ভূমি সমস্যার সমাধান করা না হলে জনগণ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে

এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে ইউপিডিএফ-এর বিবৃতি

প্রতিষ্ঠার এক যুগ পূর্তিতে ইউপিডিএফ চার-পৃষ্ঠার একটি বিবৃতি প্রচার করে৷ এতে বলা হয়, “দেশের বর্তমান সংবিধান ত্রুটিপূর্ণ, এ সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সমতল অঞ্চলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তার স্বীকৃতি নেই৷ বাঙালি উগ্রজাতীয়তাবাদকে সংবিধানের নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে ও ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে৷ সে কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের নিকট তা গ্রহণযোগ্য নয়

বিবৃতিতে সরকারের কাছে ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়৷ দাবিগুলো হলো, দেশের সংবিধানে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের স্বীকৃতি প্রদান ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে স্বায়ত্তশাসিত এলাকা ঘোষণা করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা অপারেশন বন্ধ ও সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা, প্রথাগত ভূমি অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভূমি বেদখল বন্ধ ও বেদখলকৃত জমি ফিরিয়ে দেয়া, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসনকে সামরিক প্রভাব মুক্ত করা, সেটলারদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন করা, পাহাড়ি নারীদের উপর নির্যাতন, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি বন্ধ করা, সভা সমাবেশের ওপর অবৈধ ও অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া, ইউপিডিএফ-এর ওপর দমন পীড়ন বন্ধ করা, আটককৃত ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মিদের মুক্তি দেয়া, সাধারণ জনগণের ওপর অত্যাচার, ধরপাকড়, গ্রাম ঘেরাও, সেনা তল্লাশী, ভয় ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করা, ধর্মীয় গুরুদের হয়রানি বন্ধ করা, ধর্মচর্চার ওপর অঘোষিত বাধা নিষেধ তুলে নেয়া ও মহালছড়ির সারনাথ অরণ্য কুটির থেকে সেনা চৌকি প্রত্যাহার করা, ১৯ – ২০ ফেব্রুয়ারী সাজেক ও ২৩ ফেব্রুয়ারী খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি গ্রামে সামপ্রদায়িক হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার করা, ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা ও তিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং সেমুতাঙসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের খনিজ সম্পদ স্থানীয়দের চাহিদা ও অগ্রাধিকার নিশ্চিত না করে অন্যত্র পাচার না করা

এছাড়া বিবৃতিতে বিভিন্ন জাতীয় ইসু্যতে সরকারের প্রতি, পার্বত্য চটগ্রামের ছাত্র যুবকদের প্রতি, সরকারী আধা-সরকারী স্বায়ত্তশাসিত আধা-স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ানদের প্রতি, সেটলারদের উদ্দেশ্যে ও সন্তু লারমা চক্রের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান জানানো হয়েছে

 

 

 

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More