সেনারা মিতালির বাবা-মাকে ছেড়ে দিয়েছে

0

রাঙামাটি : রাঙামাটির সাপছড়ি ইউপি’র বোধিপুর গ্রাম থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক আটকের ২৪ ঘন্টা পর সেনা হেফাজতে থাকা গৃহবধু মিতালি চাকমার বাবা ধনমনি চাকমা ও মা রূপনা চাকমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টার সময় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর একদিন আগে অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টার সময়  একদল সেনা সদস্য তাদের দু’জনকে ও গ্রামের কার্বারীর ছেলে পুতুল চাকমাকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। তবে মিতালির বাবা-মাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও পুতুল চাকমা ছেড়ে দেওয়া হয়নি।

ছাড়া পাওয়ার পর ধনমনি চাকমা ও রূপনা চাকমা এই প্রতিবেদককে জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি সেনা সদস্যরা তাদেরকে গাড়িতে করে সরাসরি খাগড়াছড়ি জোনে নিয়ে যায়। সেখাানে নেয়ার পর সেনা কর্মকর্তারা তাদের মেয়ে মিতালি চাকমা সম্পর্কে নানা জিজ্ঞাসা করেন। মিতালি চাকমাকে কারা অপহরণ করেছে, মিতালি চাকমাকে কেন বিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অনলাইনে প্রচার করা হয়েছে এসব বিষয়ে সেনারা জিজ্ঞাসা করলে তারা মিতালি চাকমাকে কেউ অপহরণ করেনি এবং মিতালিকে সামাজিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জবাব দেন। এ সময় সেনারা তাদেরকে নানা ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন।

তাদের কাছ থেকে সঠিক জবাব পাওয়ার পর সেনারা পরে মুখোশ বাহিনীর সদস্য ঝিমিত চাকমাকে জোনে ডেকে পাঠিয়ে তাদেরকে নিয়ে যেতে বলে। এরপর ঝিমিত তাদেরকে তেঁতুলতলা এলাকায় নিয়ে গিয়ে একটি বাড়িতে রাখে। পরদিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে আবারো জোনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিকালে মুখোশ সদস্য ঝিমিতকে সাথে নিয়ে সেনারা গাড়িতে করে তাদেরকে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়। বিকাল ৫টা নাগাদ তারা বাড়িতে এসে পৌঁছেন।

উল্লেখ্য, গত বছর ১৭ নভেম্বর রাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা মিতালী চাকমাকে কুদুকছড়ির ডলুছড়ি গ্রামের তার শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামী সঞ্জীব চাকমা, শ্বশুর প্রসন্ন কুমার চাকমা ও শ্বাশুরী সুনন্তা চাকমাসহ আটক করে। এরপর সেনারা মিতালি চাকমাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গিয়ে বাকীদের কারাগারে প্রেরণ করে। এরপর থেকে মিতালি চাকমাকে এখনো সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনার পর ২ ডিসেম্বর মিতালির বাবা ধনমনি চাকমা, মা রূপনা চাকমাসহ পরিবারের সদস্যরা মিতালি চাকমাকে উদ্ধারের দাবি জানিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। কিন্তু মিতালিকে ফিরে পাওয়া তো দূরের কথা উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
—————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More