ইউপিডিএফ নেতা ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে
বান্দরবান।। ইউপিডিএফ’র বান্দরবান জেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠক ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে বান্দরবান পৌর কমিশনার মোঃ আবুল খায়ের (আবু), তার বড় ভাই নির কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা ও স্ত্রী নৃপপ্রিয়া তঞ্চঙ্গ্যার জিম্মায় তাকে তুলে দেয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গ্রেফতারের ১৪ ঘন্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হলো।
ছাড়া পাওয়ার পর ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা সিএইচটি নিউজ ডটকমকে বলেন ‘গতকাল রাতে গোয়েন্দা বিভাগের দু’জন সদস্য ফোন করে আমার কাছে আসেন আজকের মিঠুন চাকমার স্মরণসভা বিষয়ে আলোচনার জন্য। তারা আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন স্মরণসভা করা হলে আমার এবং আমাদের পার্টির জন্য মারাত্মক কিছু করা হবে। আমি তাদেরকে বোঝাতে চেষ্টা করি যে এটা কেন্দ্র-ঘোষিত গণতান্ত্রিক কর্মসূচি, পালন করতে না পারলে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। আমি এ বিষয়ে তাদের সাহায্য কামনা করি। কিন্তু তারা কোন ধরনের কর্মসূচি করা যাবে না বলে জানায় এবং স্মরণ সভা বা প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হলে আমার জীবনের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।’
ছোটন তঞ্চঙ্গ্যা বলেন এরপর তিনি বাড়িতে ফিরে গেলে বান্দরবান জোনের এক মেজর তাকে ফোনে চায়ের দাওয়াত দেন। তবে তিনি তা সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন এই বলে যে, ‘আগে একবার আপনাদের চায়ের দাওয়াত খেতে গিয়ে আমাকে অপদস্থ হতে হয়েছে।’
উক্ত মেজরের সাথে আলাপের পর ছোটন তার মোবাইল অফ করে ঘুমিয়ে পড়েন।
এর কিছুক্ষণ পর একজন ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে আর্মিরা এসে তাকে নিয়ে যায় বলে ছোটন জানান। তিনি আরো বলেন, ‘তারা আমাকে পিছমোড়া করে বাঁধে এবং চোখও বেঁধে দেয়। অফিস থেকে কাগজপত্র নিয়ে যায় এবং চাবিও রেখে দেয়।’
ছোটন জানান জোন সদর দপ্তরে নেয়া হলে সেখানে জোন কমান্ডার লে.ক. মশিউর রহমান তার সাথে কথা বলেন।
জোন কমান্ডার ভদ্র ব্যবহার করেন বলে ছোটন জানান এবং বলেন ‘তিনি আমার কথা বেশ মন দিয়ে শোনেন এবং আমার কোন কোন যুক্তি মেনে নেন।’
তিনি বলেন ‘তবে একজন সেনা আমার কাছে জানতে চান আমি কেন নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিই না। আমি বলি আমি তঞ্চঙ্গ্যা, আমার মাতৃভাষা তঞ্চঙ্গ্যা। এই কথা বলার পরই সে আমাকে অপদস্থ করে।”
পরে আজকের স্মরণ সভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসুচি করা যাবে না বলে কঠোর ভাষায় হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। অফিসের চাবি ও কাগজপত্রও ফেরত দেয়া হয়েছে।
ইউপিডিএফ-এর সাধারণ সম্পাদক এক বিবৃতিতে ছোটন কান্তি চাকমাকে আটকের ঘটনাকে মৌলিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।