কাচালঙে কার্তন্যাদের দুর্দিন
বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি।। রাঙামাটির রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকা কাচালঙে কার্তন্যাদের দুর্দিন চলছে। কর্ণফুলি পেপার মিল (কেপিএম) কর্তৃপক্ষ বাঁশ সংগ্রহের জন্য এ বছর অর্থ না ছাড়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, কেপিএম নির্দিষ্ট কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে প্রতি বছর কাচালং সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে মিলের কাঁচামাল হিসেবে বাঁশ সংগ্রহ করে থাকে। এ জন্য তাদেরকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। পরে কন্ট্রাক্টর বা টিকাদাররা তাদের অধীনস্থ মধ্যস্বত্বভোগী সওদাগরদের মাধ্যমে কার্তন্যাদের কাছে টাকা সরবরাহ করে। কার্তন্যারা বাঁশ কেটে তা সওদাগরদের বুঝিয়ে দেয়।
এক বাঁশ ব্যবসায়ী সিএইচটি নিউজ ডটকমকে জানান, কেপিএম এ বছর বাঁশ কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করলেও এখনো টাকা ছাড়েনি, এমনকি বাঁশ সরবরাহের গত বছরের বকেয়া টাকাও পরিশোধ করেনি। তাই ক্ষতির আশঙ্কায় ঠিকাদাররা এ বছর কার্তন্যাদের টাকা দেয়নি।
এ কারণে কাচালঙে বাঁশের দাম গত বছরের তুলনায় ২৫% কমেছে। গত বছর যেখানে দুলু ও এগোজ্যা বাঁশের দাম ছিল ১৯ থেকে ২০ টাকা, বর্তমানে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। গত বছর অরা ও মিদিঙ্যা প্রজাতির বাঁশের দাম পাওয়া যায় ২৮ থেকে ২৯ টাকা। এখন তার দাম পড়ে ১৯ থেকে ২০ টাকা।
সওদাগররা টাকা না ছাড়ার কারণে এবং বাঁশের দাম কমে যাওয়ায় বাঘাইছড়ির কাচালঙ, গঙ্গারাম ও শিজক ভেলীতে কার্তন বা বাঁশ কাটা এখন প্রায় বন্ধ রয়েছে। প্রতি বছর যেখানে ৩ থেকে ৪ হাজার কার্তন্যা বাঁশ কাটার জন্য রিজার্ভ ফরেস্টে ঢুকতেন, এখন তার সংখ্যা মাত্র ৩০-৪০ জন।
বাঁশ কাটার পর দুইভাবে সেগুলো টানা হয়: স্থানীয় ভাষায় তার নাম দেয়া হয়েছে ‘ছড়া কাটিং’ ও ‘রোড কার্টিং’। অর্থাৎ বাঁশগুলো ছড়া বা নদী পথে নামানো হলে তা ‘ছড়া কার্টিং’, আর রাস্তা দিয়ে নিয়ে আসা হলে তাকে বলা হয় ‘রোড কার্টিং’।
এক কন্ট্রাক্টর জানান ছড়া কার্টিং এ বাঁশের চাহিদা ৮ হাজার মেট্রিক টন বা ১৫ – ১৬ লক্ষ বাঁশ। আর রোড কার্টিং এ ৫ হাজার মেট্রিক টন বা ৯ থেকে ১০ লক্ষ বাঁশ।
গত বছর রোড কার্টিং হয়নি। আর এ বছর কোন কার্টিংই হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কার্তন্যারা।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।