খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আগ্রাসন দিবস পালিত
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রাম আগ্রাসন দিবস উপলক্ষ্যে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের উদ্যোগে খাগড়াছড়িতে ‘বেলুচ রেজিমেন্ট কর্তৃক রাঙ্গামাটি দখল ও শোষণ-শোষণ: জাতীয় চেতনার উন্মেষ ও পাহাড়ি জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম‘ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২০ আগস্ট সোমবার খাগড়াছড়ি জেলা শহরের স্বনির্ভরস্থ ঠিকাদার সমিতি ভবন হলরুমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নতুন কুমার চাকমা। অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নিকোলাস চাকমা ও পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক সুপ্রীম চাকমা।
বক্তারা বলেন, ২০ আগস্ট পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি কালো দিবস। ১৯৪৭ সালের ২০ আগস্ট সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে পাকিস্তান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম দখল করে নেয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানী শাসন-শোষণ থেকে মুক্তিলাভ করে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে আজো মুক্ত হতে পারেনি। স্বাধীনতার পর থেকে এই বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগামের উপর একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। পাহাড়িদের নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে বিতাড়িত করার ভয়াবহ নীল নক্সা শাসকগোষ্ঠি বাস্তবায়ন করে চলেছে।
বক্তারা সকল ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্র-যুব ও নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান বিভক্তির সময় তৎকালীন পাহাড়ি নেতাদের উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটির কোর্ট বিল্ডিং ও কোতোয়ালী থানায় ১৫ আগস্ট হতে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ভারতের পতাকা উড়ানো হয়। বান্দরবানে উড়ানো হয় বার্মার পতাকা। ২০ আগস্ট পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বেলুচ রেজিমেন্ট প্রথমে রাঙামাটিতে হানা দিয়ে উড়ন্ত ভারতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়ে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে দেয়। বান্দরবানেও তাই করে। পাকিস্তান কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রাম জবরদখল হয়ে যাওয়ার পর হতে পাহাড়ি জনগণের উপর অবর্ণনীয় লাঞ্ছনা-বঞ্চনা, অত্যাচার, নিপীড়ন-নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। যা বর্তমান পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।