খাগড়াছড়িতে ‘রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন প্রতিরোধ দিবস’ পালন করেছে পিসিপি
সিএইচটি নিউজ ডটকম
খাগড়াছড়ি: “পার্বত্য চট্টগ্রামে ধারাবাহিক রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন” এই আহ্বানে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) খাগড়াছড়িতে ‘রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন প্রতিরোধ দিবস’ পালন করেছে।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি সদরে নারাঙহিয়াস্থ রেড স্কোয়ারে পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার উদ্যোগে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি সিমন চাকমা, পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সভাপতি সোনায়ন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক সুনীল ত্রিপুরা প্রমুখ। সমাবেশ শেষে মিছিল করতে গেলে সেনা-পুলিশের বাধার কারণে তারা মিছিল বের করতে পারেনি।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ১৯৯৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে যেভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হয়েছে একইভাবে বর্তমানেও সরকার পাহাড়ি জাতিসত্তার অস্তিত্ব ধ্বংস করার স্টীমরোলার অব্যাহত রেখেছে। এসবের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ তথা সর্বস্তরের নির্যাতিত জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আজও দুটি প্রশাসন চলছে। একদিকে সিভিল প্রশাসন এবং অন্যদিকে সামরিক প্রশাসন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রালয়ের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক ১১টি নির্দেশনা জারি করে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। একই সাথে অব্যাহত রয়েছে অন্যায়ভাবে ধরপাকড়, মামলা হয়রানি, ভূমি বেদখল, সেনা-পুলিশি নির্যাতন। অন্যদিকে জনগণের কন্ঠরোধ করতে গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশের উপর বিধি-নিষেধ জারি রাখা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ফ্যাসিস্ট কায়দায় দেশ পরিচালনা করছে। কোন ধরনের মত প্রকাশ করা যাচ্ছে না। গণতান্ত্রিক পরিবেশ আর নেই। এই অবস্থা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
বক্তারা অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অগণতান্ত্রিক ১১ নির্দেশনা বাতিল করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি এবং রাষ্ট্রীয় নির্যাতন নিপীড়ন, অন্যায় ধর-পাকড়, মিথ্যা মামলা, ভূমি বেদখল বন্ধ করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য ১৯৯৩ সালে ৩০ অক্টোবর ডিসি অফিসে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধর্মঘট পালনের লক্ষে খাগড়াছড়ি খেজুড়বাগান মাঠে পিসিপি’র নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হলে দাঙ্গা পুলিশ বিনা উস্কানীতে হামলা করে। পুলিশের বেপোরোয়া লাঠি চার্জে ৫০ জনের অধিক আহত হন। এ সময় ১০ জনকে আটক করা হয়। পুলিশী নির্যাতনের এই দিনটিকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ তার পরের বছর থেকে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।