খাগড়াছড়ি কলেজে পিসিপি’র নতুন কমিটি গঠিত
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটি নিউজ.কম
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ শাখার ৪র্থ কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিলে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কলেজ কমিটি গঠন করা হয়।
কাউন্সিল উপলক্ষ্যে আজ ১৬ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজ মাঠে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। “রামু-রাঙামাটিতে উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হামলার প্রতিবাদে সোচ্চার হোন. জাতীয় অস্তিত্ব রার সংগ্রামে ছাত্র সমাজ জেগে উঠুন”-এই শ্লোগানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিপুল চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) নেতা মিঠুন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক রেমিন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শিমন চাকমা। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধনীময় ত্রিপুরা ও উপস্থাপনা করেন সোনায়ন চাকমা।
সমাবেশে ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমা বলেন, সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহকে যেভাবে ধ্বংস করার জন্য সরকার যেভাবে দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে তা থেকে উত্তরণের জন্য ছাত্র সমাজকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করলে জাতি তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি রাঙামাটি, কক্সবাজার, উখিয়া, পটিয়ায়ার ঘটনায় সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এটা সংখ্যালঘু জাতি ও জনগণের জন্য একটি অশনি সংকেত।
তিনি বলেন, ‘৭২ সালের সংবিধানে যেমনি জাতিসত্তাসমূহকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি, তেমনি পঞ্চদশ সংশোধনীতেও জাতিসত্তাসমূহকে অস্বীকার করে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর ওপর বাঙালী জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
সুমেন চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, জাতিসত্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ছাত্র সমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। তিনি বাঙালী জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাসের সময় নীরব ভূমিকা পালনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন এমপির কড়া সমালোচনা করেন।
তিনি শিক্ষা সংক্রান্ত ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন জোরদার করার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
কণিকা দেওয়ান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে পুরুষের পাশাপাশি নারী সমাজকেও অংশগ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ছাত্রীদের আরো বেশি সোচ্চার হতে হবে।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সহ সাধারণ সম্পাদক রেমিন চাকমা বলেন, সমাজকে পরিবর্তন করার জন্য ছাত্র সমাজে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। আগামী দিনের সমাজ পরিবর্তনের লড়াইয়ে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সমাবেশ শেষে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কলেজ কমিটি ঘোষণা করা হয়। উপস্থিত সকলে মুর্হুমুর্হু করতালির মধ্যে দিয়ে ঘোষিত কমিটিকে স্বাগত জানান। কমিটিতে সুভাষ চাকমাকে সভাপতি, ধনীময় ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও থুইসিং মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা নতুন কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। এরপর সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।