নিজস্ব প্রতিবেদক
সিএইচটিনিউজ.কম
চট্টগ্রাম: গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ২১ সদস্য বিশিষ্ট চান্দগাঁও থানা শাখা কমিটি গঠিত হয়েছে। আজ ২৫ জুন মঙ্গলবার চট্টগ্রামের চান্দগাও থানায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন শেষে উক্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়। নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি হলেন ঊশৈ চিং চাক, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যাজাসাই মারমা।সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা সম্মেলন বানচালের ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। কাপ্তাই, চট্টগ্রামের বন্দর ও পাহাড়তলি থেকে সন্তু গ্রুপের সদস্যরা সম্মেলন স্থল ল্যান্ডমার্ক কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকে হামলা করতে গেলে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সদস্য ও সমর্থকরা তাদের ধাওয়া করে মৌলভী পুকুর পাড় পর্যন্ত নিয়ে যায়। এ সময় সন্তু গ্রুপের দু’জন সন্ত্রাসী জনতার হাতে ধরা পড়ে। তাদেরকে উত্তম মধ্যম দেয়ার পর পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশও তাদেরকে বেধড়ক পেটানোর পর ছেড়ে দেয়।
সকাল সাড়ে দশটায় সম্মেলন শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সোহেল দেওয়ান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের সংগঠক বকুল চাকমা, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির স্থানীয় নেতা অমৃত বড়ুয়া, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের নেতা ফয়সাল, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকো মারমা ও সদস্য এসিমং মারমা।
বক্তারা বলেন, ‘সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন আইনের সংশোধনী নিয়ে কানামাছি খেলছে। এই আইনের মাধ্যমে পাহাড়িদের হারানো জমি ফিরে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।’ তারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা প্রথাগত ভূমি আইনের ভিত্তিতে উক্ত আইন সংশোধনের দাবি জানান।সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, চাক, ম্রো তথা পাহাড়িরা বাঙালি নয়, তাদের আলাদা জাতি, কিন্তু এই সংশোধনীর মাধ্যমে তাদেরকে বাঙালি বানানো হয়েছে, তাদের উপর বাঙালি জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, যা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের উপর এখনো হামলা, নির্যাতন, গ্রেফতার ও হয়রানি চলছে। শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশ করার অধিকারও তাদের নেই। হামলাকারীরা চিহ্নিত হলেও তাদের শাস্তি দেয়া হয় না। মাটিরাঙ্গাসহ বেশ কিছু এলাকায় পাহাড়িদেরকে সাম্প্রদায়িক হামলার আশঙ্কায় ভয়ে ও আতঙ্কে দিন কাটাতে হয়।
তারা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, পাহাড়িসহ সংখ্যালঘু জাতিসমূহের জাতিসত্তা ও প্রথাগত ভূমি অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, বেদখলকৃত জমি ফেরত দান, বহিরাগত সেটলারদেরকে সমতলে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং অবিলম্বে পাহাড়ি জনগণের উপর হামলা নির্যাতন হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।বক্তারা সন্তু লারমার কড়া সমালোচনা করে বলেন, তিনি আঞ্চলিক পরিষদের গদিতে বসে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন না করে নিজের ভাইয়ের বুকে গুলি চালাচ্ছেন, তাদের খুন জখম করছেন। তার ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের নীতি পাহাড়ি জনগণের আন্দোলনে চরম ক্ষতি করছে।
তারা সন্তু লারমার গণবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী কার্যকলাপ প্রতিহত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
——