গুইমারায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
সিএইচটিনিউজ.কম
গুইমারা(খাগড়াছড়ি): কাপ্তাইয়ে স্কুল ছাত্রী ছবি মারমা(উমাসিং)কে ধর্ষণের পর হত্যার সাথে জড়িত বাঙালি সেটলার মিজান ও রানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নান্যাচরের বগাছড়িতে পাহাড়িদের বসতবাড়ি ও দোকানে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে গুইমারায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) গুইমারা থানা শাখা।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১.০০ টায় মিছিলটি গুইমারা রামসু বাজার থেকে বের হয়ে গুইমারা বাজার প্রদক্ষিণ করে গুইমারা প্রেস ক্লাবের সামনে মিলিত হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন পিসিপি মাটিরাঙ্গা থানা শাখার অর্থ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, গুইমারা থানা শাখার সদস্য সমর জ্যোতি চাকমা ও মাটিরাঙ্গা ডিগ্রী কলেজ শাখার সভাপতি দিপংকর ত্রিপুরা প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, সেটলার কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারী ধর্ষণ, খুন ও সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। কাপ্তাইয়ে ছবি মারমার(উমাসিং)কে ধর্ষণের পর গলাকেটে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সেটলাররা। বক্তারা ছবি মারমাকে ধর্ষণের পর হত্যাকারী মিজান ও রানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
বক্তারা আরো বলেন, পাহাড়িদের ভূমি বেদখল করে তাদের চিরতরে উচ্ছেদ করতে সরকার সেটলারদের লেলিয়ে দিচ্ছে। ২০১৩ সালে মাটিরাঙ্গার তাইন্দংয়ে সেটলার হামলার পুনরাবৃত্তি হিসেবে গতকাল নান্যাচরের বগাছড়িতে পাহাড়িদের ৫০টি বসতবাড়ি ও ৭টি দোকান পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে। শাসকগোষ্ঠীর ইন্ধনের এসব পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত করা হচ্ছে বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণকে এখনো পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। পাহাড়িদের উপর প্রতিনিয়ত জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সরকার একদিকে সেনা-সেটলারদের লেলিয়ে দিয়ে নির্যাতন, হামলা চালাচ্ছে, অপরদিকে ‘ভাগ করে শাসন করা’র নীতি জারি রেখে পাহাড়িদের মধ্যে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
বক্তারা তথাকথিত জাতীয় দলভুক্ত পাহাড়ি দালালদের সমালোচনা করে বলেন, সরকারের কূটকৌশলে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টির কার্যকলাপে এসব দালালরা লাফালাফি করলেও পাহাড়িদের উপর যখন হামলা হয়, পাহাড়ি নারীদের যখন ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়, তখন তারা নীরব থাকে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে তাদেরকে কোন প্রতিবাদ করতে দেখা যায় না। এর থেকেই বুঝা যায়, এরা আসলে সরকারের গুটি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে জাতিধ্বংসের খেলায় মত্ত রয়েছে।
বক্তারা বগাছড়িতে পাহাড়িদের বসতবাড়ি ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগকারী সেটলারদের অবিলম্বে আইনের আওতায় নিয়ে আসা, ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ সহ পাহাড়ি জনগণের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।