চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সাথে পিসিপি ও ডিওয়াইএফ’র মতবিনিময় সভা
চট্টগ্রাম : ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম বর্তমান পরিস্থিতি ও সংখ্যালঘু জাতির মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা’ বিষয়ে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ)।
আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭) বেলা ২টায় চট্টগ্রাম নগরীর সুপ্রভাত স্টুডিও হলরুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘অপারেশন উত্তরণ’-এর নামে সেনাশাসন তুলে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সভা থেকে সংখ্যালঘু জাতির মাতৃভাষায় প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা চালুর পরিপ্রক্ষিতে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা’ দিবসে শহীদ মিনারে পূষ্পস্তবক অপর্ণ করা থেকে পিসিপি কর্তৃক বিরত থাকার পূর্বতন কর্মসূচী প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারি’১৭ থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ চট্টগ্রাম এবং তিন পার্বত্য জেলায় ভাষা শহীদদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করাসহ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসকে সামনে রেখে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রাম নগরীতে সকল জাতিসত্তার বর্ণমালা মিছিল বের করা হবে বলে মতবিনিময় সভা থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি পলাশ চাকমার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা। এছাড়া এতে আরো উপস্থিত ছিলেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বিপুল চাকমা, সহ-সাধারণ সম্পাদক অংকন চাকমা, পিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিকো চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যসিং মারমা, ডিওয়াইএফ চট্টগ্রাম মহানগরের সহ-সভাপতি শুভ চাক ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুকৃতি চাকমা প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে অংগ্য মারমা বলেন, ২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কর্তৃক দমনমূলক অগণতান্ত্রিক ‘১১ নির্দেশনা’ জারির পর পার্বত্য চট্টগ্রামে সভা-সমাবেশে বাধা প্রদান, গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর অন্যায় হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাধ্যমে সেনাশাসনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
সভায় দু’সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ইউপিডিএফ ও এই দলভুক্ত সংগঠনগুলোর ওপর দমনপীড়ন বন্ধের দাবিসহ মিথ্যা মামলা-হুলিয়া তুলে নেওয়া, তল্লাশীর নামে হয়রানি এবং ঘেরাও, নির্যাতন বন্ধ করারও দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া নেতৃবৃন্দ জেলে আটক নেতা-কর্মীদের নিঃর্শত মুক্তি প্রদানসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া মতবিনিময় সভা থেকে ডিওয়াইএফ, পিসিপিসহ ইউপিডিএফ ভুক্ত সংগঠনের সভা-সমাবেশের ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া; পিসিপি’র শিক্ষা সংক্রান্ত পাঁচ দফা দাবি পূর্ণবাস্তবায়ন করা; কল্পনা চাকমা অপহরণকারীদের গ্রেফতার, বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করাসহ নারীর ওপর যৌন সহিংসতা বন্ধ করা; ভূমি বেদখল রোধ করা, প্রথাগত ভূমি আইনের স্বীকৃতি প্রদানসহ বেদখলকৃত জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারে প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
মতাবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিতি ছিলেন।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।