চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচতারকা হোটেল নির্মাণ বন্ধের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের বিক্ষোভ
ঢাকা ।। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীদের উচ্ছেদ করে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ বন্ধসহ তিনটি দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ। তাদের অপর দুইটি দাবি হচ্ছে- পাহাড় থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহার ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা।
আজ শনিবার (১৪ নভেম্বর ২০২০) বিকালে ঢাকায় শাহবাগে জাদুঘরের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুনয়ন চাকমার সভাপতিত্বে ও ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোভেল, বিপ্লবী ছাত্র যুব অন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মোমেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক সৈকত আরিফ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক তাজ নাহার রিপন, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক প্যাট্রিক চিসিম এবং জেএসএস (এম এম লারমা) ছাত্র সংগঠনের ঢাকা নগরের সাধারণ সম্পাদক আম্বেদকর চাকমা।
এছাড়া সমাবেশে উপস্থিত থেকে সংহতি জানান গণসাংস্কৃতিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু, কবি হাসান ফকরী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, ইউনাইটেড কমুনিষ্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম এবং বিবর্তনের সদস্য চম্পাবতি এন মারাক।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় দীর্ঘদিন ধরে টুরিজম ও উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল করে পাহাড়ি উচ্ছেদ চালানো হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ বান্দরবানে চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীদের উচ্ছেদ করে এক হাজার একর জায়গা দখল করে সেনা কল্যাণ সংস্থা ও শিকদার গ্রুপ যৌথভাবে সেখানে পাঁচতারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক করছে। এর ফলে দশ হাজারের অধিক ম্রো জাতিসত্তার লোকজন তাদের পৈতৃক ভূমি থেকে উচ্ছেদ হবে এবং অন্যান্য ৪-৫ টি গ্রামও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ২০১১ সালে ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে বাঙালি ভিন্ন অন্যান্য জাতিসত্তাদের বাঙালি হিসেবে অভিহিত করে। ফলে বাঙালি ভিন্ন ৪৫টি অধিক জাতিসত্তাকে পরিচিতি সংকটে ফেলা হয়। সেই অস্বীকারের রাজনীতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে জনমিতি পরিবর্তনের অংশ হিসেবে উন্নয়ন ও টুরিজ্যমকে ব্যবহার করে সরকার তাদের নীলনক্সা বাস্তবায়ন করছে।
তারা বলেন, উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে, তবে সেটা অবশ্যই স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্তায় এবং অবশ্যই তাদের স্বার্থে, তাদের অনুমতি নিয়ে করতে হবে বলে বক্তারা অভিমত দেন।
বক্তারা অবিলম্বে ম্রোদের উচ্ছেদ করে পাঁচতারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণ বন্ধ করার দাবি জানান।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত/প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।