জুরাছড়িতে ১৭তম নান্যাচর গণহত্যা দিবস পালিত

0

রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
রাঙামাটি জেলার জুরাছড়িতে ১৭তম নান্যাচর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৭ নভেম্বর ২০১০ সকাল ১০টায় জুরাছড়ি উপজেলা মিলনায়তনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম-এর জুরাছড়ি উপজেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জুরাছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি মহারঞ্জন চাকমা। এতে রাখেন জুরাছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রবর্তক চাকমা, ভাইস চেয়ারম্যান রূপ কুমার চাকমা, ১নং জুরাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি চাকমা, ৪নং দুমদুম্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজিয়া চাকমা, ১নং জুরাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বীর চাকমা ও মহিলা মেম্বার জলঙ্গ রাণী চাকমা এবং গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জুরাছড়ি শাখার সদস্য পরেশ চাকমা। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সদস্য স্মৃতি বিন্দু চাকমা এবং সভা পরিচালনা করেন বিকল্প চাকমা।

অনুষ্ঠান শুরুর আগে নান্যাচর গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং সভা শুরুতে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৯৩ সালের ১৭ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে নান্যাচর বাজারে আসা সাধারণ পাহাড়িদের উপর সেনা-সেটলাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে নারকীয় গণহত্যা চালায়। সেদিন সেনা-সেটলারদের হামলায় ১৭ জনের অধিক নিরীহজনসাধারণ নিহত হন এবং আরো অগণিত নারী-পুরুষ আহত হন। আজ ১৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও নান্যাচর গণহত্যার সঠিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

বক্তারা আরো বলেন, নান্যাচর গণহত্যা সহ পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবতকালে ডজনের অধিক গণহত্যা সংঘটিত করা হয়েছৈ। এ সকল গণহত্যা চালানোর মাধ্যমে পাহাড়িদের চিরতরে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে শাসকগোষ্ঠির যে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত তা আজো অব্যাহত রয়েছে। গত ১৯-২০ ফেব্রুয়ারী সাজেক এবং ২৩ ফেব্রুয়ারী খাগড়াছড়িতে পাহাড়িদের গ্রামে সেনা-সেট্লার হামলা তারউ প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বক্তারা সরকার তথা শাসকগোষ্ঠির সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থেকে অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

বক্তারা অবিলম্বে নান্যাচর গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল গণহত্যার শ্বেতপত্র প্রকাশ, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারপূর্বক অপারেশন উত্তরণ বাতিল করা, সেটলার বাঙালিদের সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন, সংবিধানে জাতিসত্তার স্বীকৃতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে পৃথক স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, ইউপিডিএফ ও এলাকার জনগণের পক্ষ থেকে নান্যাচরে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More