তবলছড়িতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টাকারী মনসুর আলীকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি ।। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়িতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ প্রচেষ্টাকারী মনসুর আলীকে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে তবলছড়ি এলাকাবাসী।
আজ শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১) বিকাল ৪.৩০ দিকে তবলছড়ি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, লাইফু পাড়ার কার্ব্বারী কলেন্দ্র ত্রিপুরা, এলাকার মরুব্বী মিস্টার রঞ্জন ত্রিপুরা, যুব সমাজের প্রতিনিধি পিজোস ত্রিপুরা, সতি রাম ত্রিপুরা ও নারী নেত্রী মনিরুং ত্রিপুরা, ধনদেবী ত্রিপুরা প্রমুখ। মিছিল শুরুতে ভিকটিম ছাত্রীর মা ঘটনা বিষয়ে তুলে ধরেন।
বক্তারা তাদের বক্তব্য বলেন, আমরা বর্তমানে যে গ্রামে (লাইফু পাড়ায়) বসবাস করছি এই জায়গাটি একসময় পাহাড় ও গভীর অরণ্যে ভরা ছিল। ১৯৮৬ সালে সেটেলার কর্তৃক আমাদের পুরানো গ্রাম ফেনী নদীর পাড়ে অবস্থিত “রামদেবা গ্রামে” হামলার শিকার হয়। ঐ হামলায় আমাদের গ্রামের ৪৩ জন গ্রামবাসীকে হত্যা ও গুম করা হয়। এরপর সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে আমরা এই পাহাড়ে বসতি স্থাপন করি। কিন্তু এই পাহাড়ে এসেও আমাদের মা বোনদের কোন নিরাপত্তা নেই। এখানে এসেও এযাবত ৫ জন মা বোনকে সেটলার কর্তৃক ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
তারা মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দিতে গেলে উল্টো হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন।
বক্তরা আরো বলেন, গত বছর সেপ্টেম্বরে কেওয়া পাড়ায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের প্রচেষ্টার ঘটনারও আমরা বিচার পায়নি। ফলে সেটলারদের সাহস দিন দিন বেড়ে উঠছে। আমাদের সবসময় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। যার কারণে সেটেলার কর্তৃক ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েও ভয়ে ঘটনা প্রকাশ করতে পারি না। বিচার দাবি করলে সেটলাররা সাম্প্রদায়িক হামলার ভয়ভীতি দেখায়। প্রশাসনের কাছে গেলে অযথা হয়রানির শিকার হতে হয়।
নারী নির্যাতন ছাড়াও পাহাড়িরা প্রতিনিয়ত ভূমি বেদখলের শিকার হতে হচ্ছেন বলে বক্তারা তুলে ধরেন।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে মনসুর আলীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ দুপুরের দিকে মো. মনসুর আলী (২৮) নামের সেটলার যুবক তবলছড়ি ইউনিয়নের লাইফু পাড়া এলাকায় এক ত্রিপুরা স্কুল ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের প্রচেষ্টা চালায়। পরে খবর স্থানীয় লোকজন ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. তাজু ইসলামের নিকট হস্তান্তর করে। কিন্তু তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ না নেয়ায় স্কুলছাত্রী ও তার অভিভাবকরা গতকাল বৃহস্পতিবার মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা করতে গেলে নানা অজুহাত দেখিয়ে মামলা নিতে গড়িমসি করা হয়।
আজ শুক্রবার তারা আবার মামলা করতে থানায় গেলে উল্টো স্কুল ছাত্রীকে দীর্ঘক্ষণ ধরে থানার একটি কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।