তাইন্দং এলাকায় বৌদ্ধ বিহারগুলোতে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত

0
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটনিউজ.কম 
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দংয়ে অনুপ্রবেশকারী বাঙালি কর্তৃক পাহাড়ি গ্রামে হামলা, গৌতম বুদ্ধকে অসম্মান ও ধর্মের প্রতি আঘাতের প্রতিবাদে তাইন্দং-তবলছড়ি ও বড়নাল ইউনিয়নের সকল বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঐ এলাকার সকল বৌদ্ধ সম্প্রদায়। 

আজ ৪ অক্টোবর শুক্রবার তাইন্দং এলাকার ১২টি বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি এবং স্থানীয় ত্রাণ সংগ্রহ ও বিতরণ কমিটির নেতৃবৃন্দের যৌথ স্বাক্ষরে সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বগাপাড়া শান্তি নিকেতন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিনয় চাকমা, সর্বেশ্বর পাড়া জনশক্তি বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি নয়ন জ্যোতি চাকমা, কংজাই কার্বারী পাড়ার লাভামনি বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি থৈলাপ্রু মারমা, আচালং মারমা পাড়া শাক্যমনি বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি চিংহ্লাপ্রু মারমা, তবলছড়ি ডাক বাংলা লুম্বিনী বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কংজ মারমা, কদমতলী জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কালোময় চাকমা, মনুদাস পাড়া জনসেবা বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির চিকন চান চাকমা, দেওয়ান পাড়া আম্রকানন বৌদ্ধ বিহারের সুমন চাকমা, মাষ্টার পাড়া আম্র কানন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্মল চাকমা, তংগ মহাজন পাড়ার খেজুরবন আদর্শ বৌদ্ধ বিহারের বীর লাল চাকমা, থৈইল্লা পাড়া দীপংকর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উঃ সুরিয়া মহাথেরো, বড়নাল ইউনিয়নের সেক্রেটারী বৌদ্ধ বিহারের উগ্যজাই মারমা ও তাইন্দং-তবলছড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ ও বিতরণ কমিটির আহ্বায়ক বকুল কান্তি চাকমা প্রমুখ।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ৩ আগস্ট তাইন্দং-তবলছড়ি এলাকায় অনুপ্রবেশকারী বাঙালিরা পরিকল্পিতভাবে মো: কামাল হোসেনকে কথিত অপহরণ নাটক সাজিয়ে পাহাড়িদের গ্রামে হামলা চালায়। এতে ৩৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ সহ ৯০২টি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ হামলায় দু’টি বৌদ্ধ বিহারেও আক্রমণ করা হয়। সেটলাররা সর্বেশ্বর পাড়ার জনশক্তি বৌদ্ধ বিহার পুড়ে দেয় এবং এই বিহারসহ মনুদাস পাড়ার জনসেবা বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধমূর্তি লুট ও ভাংচুর করে মহামতি গৌতম বুদ্ধকে অসম্মান ও ধর্মের প্রতি আঘাত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, তাইন্দং হামলার শিকার হয়ে ধর্মীয় গুরুদের অধিস্থান ভঙ্গ হওয়ায় ও জানমালের নিরাপত্তার অভাবে ৬টি বৌদ্ধ বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব পালনে বিরত থাকায় তাদের সাথে একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশ করে তাইন্দং-তবলছড়ি ও বড়নাল ইউনিয়নের সকল বৌদ্ধ বিহারে শুভ কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে তারা পরিকল্পিত এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অচিরেই ভেঙে দেওয়া বুদ্ধমূর্তি প্রতিস্থাপনসহ লুট হওয়া বুদ্ধমূর্তি উদ্ধার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের স্ব স্ব বসতভিটায় বাড়ি নির্মাণ পূর্বক যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন সহ বৌদ্ধ বিহার নির্মাণ এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

——

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More