থানচিতে খাদ্য সংকট: দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিন
থানচিতে খাদ্য সংকট
দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিন
বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম পার্বত্যাঞ্চলে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার পর সরকার ও প্রশাসন যেভাবে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা সাধুবাদযোগ্য। আমরা দেখেছি, সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের দুই-একদিনের মধ্যেই সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে খাদ্য সংকট উপদ্রুত এলাকায় চাল পাঠানো হয়েছে। সড়কপথে যোগাযোগবিহীন এবং শঙ্খ নদীতে প্রবাহ স্বল্পতার কারণে এ ছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিল না, বলা বাহুল্য। হেলিকপ্টারে ত্রাণের চাল বহন কেবল উপযোগিতার প্রশ্ন ছিল না; এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতাও প্রকাশ পেয়েছে। আমরা জানি, সোমবার থেকে দুর্গত পরিবারপ্রতি ২০ কেজি করে চাল বিতরণও শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেউ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলব। বিভিন্ন আপদকালীন সময়ে ত্রাণ বিতরণে যে অনিয়ম ও অভিযোগের নজির দেখা যায়, থানচিতে তার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না আমরা। বিশেষ নৃতাত্তি্বক ও সাংস্কৃতিক ওই অঞ্চলের অধিবাসীরা যাতে ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়ায় কোনোভাবে অমর্যাদাবোধের শিকার না হয়, সেদিকেও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলব। এই প্রশ্নেও নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে যে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জুম চাষে ফলন ভালো না হওয়ায় মার্চ থেকে সূচিত খাদ্য সংকট প্রথম থেকেই কেন প্রশাসনের নজরে আসেনি। এখন জুম অঞ্চলের অন্যান্য এলাকার পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখার তাগিদ তৈরি হলো। আমরা চাইব, মৌসুমের খাদ্য সংকট পুরোপুরি কেটে না যাওয়া পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিও গ্রহণ করা যেতে পারে; যাতে করে দুর্গম এলাকাটির উন্নয়ন প্রক্রিয়াও এগিয়ে যায়। থানা সদরের সঙ্গে স্থল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার সূচনাকাজ হতে পারে এ ক্ষেত্রে একটি অগ্রাধিকার। তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে, খাদ্য সংকটের চূড়ান্ত কারণ অনুসন্ধান এবং সে ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ। কেবল বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাদ্য সংকট হয়েছে_ এটা ধরে নিয়ে বসে থাকা উচিত হবে না। সাম্প্রতিককালে সেখানকার প্রতিবেশে কোনো পরিবর্তন এসেছে কি-না এবং তার ফলেই চিরায়ত খাদ্য শৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন হয়েছে কি-না, ভাববার বিষয়।
http://bangla.samakal.net/2016/05/31/215451