দীঘিনালায় ২নং বাঘাইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ করে দিয়েছে বিজিবি
সিএইচটিনিউজ.কম
দীঘিনালা: খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া এলাকার ৫১নং দীঘিনালা মৌজার যত্নমোহন কার্বারী পাড়ায় স্থাপিত ২নং বাঘাইছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ করে দিয়েছে বিজিবি। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার কার্যক্রম। এছাড়া ওই এলাকায় কাউকে আর ঢুকতে দিচ্ছে না বিজিবি সদস্যরা।
জানা গেছে, উক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাকিস্তান আমলে স্থাপিত হয়। তৎকালীন সময়ে এ বিদ্যালয়ের নাম ছিল কায়েদে আযম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে ২নং বাঘাইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়। উক্ত বিদ্যালয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার বিজিবি-পুলিশ ও সেটলারদের হামলার শিকার হয়ে আহত হওয়া ১৮ জনের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার ১০ জনকে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা শেষে রিলিজ দেওয়া হলেও তারা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। বিজিবি সদস্যরা তাদেরকে এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না। ফলে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বর্তমানে দক্ষিণ বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
অন্যদিকে, জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদ ও মতামতকে উপেক্ষা করে বিজিবি সদস্যরা এলাকাটি ঘেরা দিয়ে ক্যাম্প স্থাপনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে গভীর রাতে গিয়ে বিজিবির ৫১নং ব্যাটালিয়নের সদস্যরা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক পাহাড়িদের জায়গা বেদখল করে সেখানে টাবু খাটিয়ে অবস্থান গ্রহণ করে ক্যাম্প স্থাপনের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে থাকে। এর প্রতিবাদে দীঘিনালাবাসী মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, মিছিল-সমাবেশ, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিপেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও বিজিবি নিজেদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ায়নি।
এরপর গত মঙ্গলবার পাহাড়িরা নিজেদের জায়গায় কলা গাছের চারা রোপন করতে গেলে বিজিবি, পুলিশ ও সেটলারা যৌথভাবে তাদের উপর হামলা চালায়। তাদের এ হামলায় ১৫ জন নারীসহ ১৮ জন পাহাড়ি গ্রামবাসী আহত হয়। এদিকে, এ ঘটনায় উল্টো ২৫০ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে দীঘিনালায় থানায় মামলা করেছে বিজিবি।
দীঘিনালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহদাত হোসেন টিটো জানান, বিজিবি’র সুবেদার মেজর গোলাম রসুল বাদী হয়ে আড়াইশ’ গ্রামবাসীকে আসামি করে মামলা করেছেন। এতে সরকারি কাজে বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।
—————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।