নবাবগঞ্জে ঢুডু সরেনের স্ত্রীর ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ পার্বত্য চট্টগ্রামের ৮ গণসংগঠনের
সিএইচটিনিউজ.কম
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার কচুয়া ডাঢ়কামারি গ্রামের বাসিন্দা ভূমি দস্যুদের হামলায় নিহত ঢুডু সরেনের স্ত্রী ফুল মনি মার্ডীর (৪০) ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় ভূমি দস্যুরা।
জানা যায়, আজ ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ৯টার সময় স্থানীয় হিলির ডাঙ্গা বাজারে হাটের দিনে ঝাড়ূ দেয়ার সময় স্থানীয় ভূমিদস্যু ও ঢুডু সরেন হত্যা মামলার প্রধান আসামী ডা: গোফ্ফার গং এর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী সবুজ মিয়া (৩০), পিতা গোলজার আলী তার ওপর হামলা চালায়। হামলায় ফুলমনি মার্ডী মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ঢুডু সরেনক হত্যার দেড় মাসের মাথায় এ হামলার ঘটনা ঘটলো। এর আগে গত ২ আগস্ট ঢুডু সরেনকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ভূমি দস্যুরা।
উক্ত ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৮ গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটির নেতৃবৃন্দ সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক যুক্ত বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৬৪ সালে ফাগু সরেনের ৩৩.১৮ একর জমির মধ্যে ১৫ একর জমি দখল করতে না পারায় ঢুডু সরেনের হত্যাকারী ডা: গোফ্ফার এর পিতা গোলজার হোসেন এবং তার সহযোগী ভূমিদস্যু মহির উদ্দীন (কুসদহ ইউনিয়নের সাবেক ভাইসচেয়ারম্যান), আক্তার আলী গংরা তাকে (ফাগু সরেন) হত্যা করে। এর পর তার দুই ছেলেকে খুন করা হয়। ২০১১ সালে ঢুডু সরেনের বড় ভাই গসাঁয় সরেন এবং সর্বশেষ ২ আগস্ট ঢুডু সরেনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আজ ঢুডু সরেনের স্ত্রী ফুলমনি মার্ডীর ওপর প্রকাশ্যে দিবালোকে ভূমিদস্যুরা হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে।
বর্তমানে ঢুডু সরেন এবং গসাঁয় সরেনের পরিবারের সদস্যরা চরম নিপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ঢুডু সরেন খুনিদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। কেবল চাপের মুখে প্রশাসন মামলার প্রধান আসামী ডা: গোফ্ফারকে আটক করলেও বাকী খুনিরা এখনো প্রকাশ্যে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত ঢুডু সরেন ও গসাঁয় সরেন পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে।
৮ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুল মনি মার্ডীর ওপর হামলার ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত, ঢুডু সরেন হত্যা মামলার সকল আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আরও বলেন, ভূমি দস্যুরা জাল ও বেনামী দলিল তৈরী করে নবাবগঞ্জসহ সমতলের আদিবাসীদের জমি ক্রয় দেখিয়ে তাদের জায়গা বেদখল করছে। জাল ও বেনামী দলিলধারীদের শাস্তি এবং এযাবৎ বেদখল হয়ে যাওয়া আদিবাসীদের সকল জমি ও সম্পত্তি ফেরত দিতে হবে এবং ভূমি বেদখল বন্ধ করতে হবে।
আট সংগঠনের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাইকেল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা চাকমা(২), সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির নেত্রী কাজলী ত্রিপুরা ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সদস্য সচিব আনন্দ প্রকাশ চাকমা।
———
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।