নাইক্ষ্যংছড়িতে ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে আরেকটি মারমা পাড়ার লোকজন এলাকাছাড়া
সিএইচটিনিউজ.কম ডেস্ক:
নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) : নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারিতে ভূমিদস্যুদের লেলিয়ে দেওয়া ডাকাত দলের অত্যাচারে সাপমারা ঝিড়ি মারমা পাড়ার বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানিয়েছেন মৌজার হেডম্যান (প্রধান) ও কার্বারিরা (পাড়াপ্রধান)।
পার্বত্য মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি ও জনসংহতি সমিতির বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা যায়, পার্বত্য চুক্তির পর বাইশারি থেকে চারটি, লামায় একটি ও আলীকদমে একটি আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দারা ভূমিদস্যুদের ভূমিদখল ও লেলিয়ে দেওয়া ডাকাতের অত্যাচারে অন্যত্র চলে গেছেন।
সাপমারা ঝিড়ি পাড়ার কার্বারি ফো অং মারমাসহ অনেকে বলেছেন, দুই বছর ধরে গণডাকাতি ও অপহরণের ঘটনায় টিকতে না পেরে তাঁরা নয়টি পরিবার পাশের দৈয়া বাপের পাড়া ও নারিশবুনিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ডাকাতেরা গত বছর তাঁকে মারধর করে সর্বস্ব নিয়ে গেছে। গত মাসের শেষের দিকে আবারও ডাকাত দল পাড়ায় হামলা চালায়। তিনি পালিয়ে কোনোমতে রক্ষা পেয়েছেন। এর আগে পার্শ্ববর্তী পাড়ার ফরিদুল আলম ও লোকমান হাকিমকে অপহরণ করা হয়।
আলেক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান মংথোয়াই হ্লা ও বাইশারি ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুল হক জানান, সাপমারা ঝিড়ি, বাদুড়জিড়ি, লংগদু ঝিড়ি এলাকার আরও কয়েকটি আদিবাসী ও বাঙালি পাড়া উচ্ছেদের আতঙ্কের মধ্যে আছে। অধিকাংশ পরিবার এখন দিনে কাজ করলেও রাতে সেখানে থাকতে পারে না। ভূমি দখল বন্ধ ও দখল হওয়া কয়েক হাজার একর জমি উদ্ধার না হলে ডাকাতি-অপহরণ বন্ধ হবে না বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি জনসংহতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মংনু মারমা বলেন, গত বছর বাদুড়ঝিড়ি চাক পাড়া উচ্ছেদের পর পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত ১২ জন ভূমিদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এ জন্য ক্ষমতাসীন দলের ওই দখলদারেরা এখন বেপরোয়া হয়ে ডাকাত দল লেলিয়ে দিচ্ছে। পুলিশ কোনো ডাকাত গ্রেপ্তার করলে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও আহমেদ জামিল বলেন, পুলিশ তাঁকে জানিয়েছে ওই পাড়ার বাসিন্দারা তাঁদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। যদি না গিয়ে থাকে তাহলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, রাবার বাগানের কিছু মালিক জায়গা দখলের জন্য হুমকি দেওয়া ওই পাড়ার বাসিন্দারা অন্যত্র চলে গেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৌজন্যে : প্রথম আলো