নান্যাচরে বৌদ্ধ ধর্মীয় কুটির ভাংচুর ও ধর্মীয় অবমাননার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সাংবাদিক সম্মেলন
চট্টগ্রাম : রাঙামাটির নান্যাচর উপজেলায় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ধ্যান সাধনার স্থান “থলচাপ তপবন অরণ্য ভাবনা কুটিরে সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক দরজা ভেঙে জুতা পায়ে অনুপ্রবেশ, বুদ্ধমূর্তির কাপড় খুলে ফেলা ও বুদ্ধ আসনের জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়ার প্রতিবাদে এবং জড়িত সেনা সদস্যদের শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ত্রিশরণ কল্যাণ পরিষদ ও কুটির পরিচালনা কমিটি।
আজ বুধবার (২৪ মে) বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনোবোধি ভিক্ষু। এতে উপস্থিত ছিলেন, ত্রিশরণ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি পুরু রঞ্জন চাকমা, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয় লাল চাকমা, সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক বাবুল বিকাশ চাকমা, আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান জেবিএস আনন্দ বোধি ভিক্ষু প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে নান্যাচর ও লংগদু জোনে কর্মরত ২৫/৩০ জনের একটি সেনা দল নান্যাচর উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নিরবে ধ্যান সাধনার জন্য ৮ বছর আগে নির্মিত থলচাপ তপবন অরণ্য ভাবনা কুটিরের প্রধান কাঠের দরজা লাথি মেরে ভেঙ্গে ফেলা, বুদ্ধ মূর্তির রংবস্ত্র টেনে ছিঁড়ে পায়ের জুতার তলা দিয়ে মাড়িয়ে দুুমড়ে-মুচড়ে ফেলার অভিযোগ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নান্যাচর কলেজের ছাত্র এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমাকে নির্যাতন চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এহেন অবমাননা নান্যাচর বাসীসহ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সকল মানুষকে স্তম্ভিত করেছে।
সাংবাদিক সম্মেলন থেকে উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কুটিরের দরজা ভাংচুর ও ধর্মীয় অবমাননায় জড়িত সেনা সদস্যদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়।
এছাড়া সাংবাদিক সম্মেলন থেকে আগামী ২৮ মে ২০১৭ রাঙামাটির কুটিরে ধর্মীয় সভা ও ২ জুন ২০১৭ রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
পরিশেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ত্রিশরণ কল্যাণ পরিষদ ও কুটির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং ড. জিনোবোধি ভিক্ষু।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে নান্যাচর ও লংগদু জোন থেকে দুটি সেনা দল উক্ত কুটির এলাকায় অপারেশনে যায়। পরদিন ১৭ মে সকালে একদল সেনা সদস্য কুটিরে গিয়ে ভিক্ষুদের অনুপস্থিতে কুটিরের প্রধান দরজা লাথি মেরে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ধর্মীয় অবমাননার কাণ্ড ঘটায়।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।