পানছড়িতে লোগাঙ গণহত্যার স্মরণে রক্তে খোদিত “১০ এপ্রিল” প্রদর্শন ও প্রতিবাদী সভা

0

 

অস্থাীয় স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে হত্যাকান্ডে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
# অস্থাীয় স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে হত্যাকান্ডে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : ‘খুনী-ঘাতকদের আস্তানা প্রত্যাহার কর, আমাদের পৈতৃক ভিটা ফিরিয়ে দাও’ এই দাবি সম্বলিত শ্লোগানে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে লোগাঙ গণহত্যার ২৪ বছর স্মরণে রক্তে খোদিত “১০ এপ্রিল” প্রদর্শন ও প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

রবিবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় পুজগাঙ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে হত্যাকাণ্ডে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এতে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে নিহতদের স্মরণ করেন।

ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদী সভা। সভা শুরুতে হত্যাকান্ডে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

# হত্যাকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হচ্ছে।
# হত্যাকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হচ্ছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের পানছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি রতন স্মৃতি চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পলাশ চাকমা। গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি রুপায়ন চাকমা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় সেটলার কর্তৃক সংঘটিত লোগাঙ হত্যাকাণ্ডের ২৪ বছরেও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও শাস্তি হয়নি। যা খুবই উদ্বেগজনক। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত ডজনের অধিক গণহত্যায় জড়িতরা পার পেয়ে প্রতিনিয়ত পাহাড়িদের উপর হামলা, খুন, গুম, ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার মতো ঘটনা সংঘটিত করছে।

বক্তারা লোগাঙ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরণ প্রদান এবং হত্যাকা-স্থল থেকে খুনী-ঘাতকদের আস্তানা প্রত্যাহার করে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের বসতভিটা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।

# রক্তে খোদিত '১০ এপ্রিল' প্রদর্শন করছে ছাত্র-ছাত্রীরা
# রক্তে খোদিত ‘১০ এপ্রিল’ প্রদর্শন করছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

প্রতিবাদী সভা শেষে প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ডের পরিচালনায় স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে রক্তে খোদিত ‘১০ এপ্রিল’ প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর, মধুপুর, মহিলা কলেজ, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘লোগাঙ গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন’  ‘লোগাঙ হত্যাকা-স্থল থেকে ভূমিদস্যুদের প্রত্যাহার কর, ক্ষতিগ্রস্তদের ভিটেবাড়ি ফিরিয়ে দাও!’ ইত্যাদি শ্লোগান লেখা  ফেস্টুন টাঙানো হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল সেনাবাহিনী-বিডিআর(বর্তমানে বিজিবি) ও আনসার-ভিডিপি’র সহযোগীতায় সেটলার বাঙালিরা পানছড়ি উপজেলার লোগাঙে পাহাড়ি বসতিতে হামলা চালায়। এতে কয়েকশত পাহাড়ি হতাহত হয়, অনেকে গুম হয়ে যায় এবং ৭ শতাধিক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এক ধ্বংসাবশেষে পরিণত করা হয়।
—————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More